ইউক্রেনের আকাশ প্রতিরক্ষায় যুক্ত হতে যাচ্ছে ফ্রান্সের ১০০টি রাফালে যুদ্ধবিমান। সোমবার (১৭ নভেম্বর) এ সংক্রান্ত এক চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। এরমধ্যে দিয়ে রুশ আগ্রাসনের বিরুদ্ধে দীর্ঘমেয়াদি সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করছে কিয়েভ। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
প্যারিসে প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সঙ্গে জেলেনস্কি বৈঠক করছেন এমন এক সময়ে, যখন রাশিয়া সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা বাড়িয়েছে এবং দক্ষিণ–পূর্বাঞ্চলীয় জাপোরিজ্জিয়া এলাকায় পদাতিক বাহিনীর অগ্রগতি জোরালো করছে।
ফরাসি সংবাদমাধ্যমে জেলেনস্কি বলেন, তিনি ১০০টি রাফাল যুদ্ধবিমানের ক্রয়ের চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছেন। ফরাসি রাষ্ট্রপ্রধানের কার্যালয় এলিস প্যালেসের তরফ থেকে সংখ্যাটি নিশ্চিত করা হলেও, এগুলো হাতবদলের প্রক্রিয়া বা সময় নিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কিছু জানা যায়নি।
টিভি ফুটেজে দেখা যায়, ভিলাকুবলে সামরিক ঘাঁটিতে একটি রাফাল জেটের সামনে ম্যাক্রোঁ ও জেলেনস্কি “ফরাসি প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম” ক্রয়ের ঐক্য প্রস্তাবনাপত্রে সই করছেন।
গত কয়েক সপ্তাহ ধরে ফ্রান্স ইউক্রেনকে কীভাবে আরও আকাশ–প্রতিরক্ষা সহায়তা দিতে পারে—এ নিয়ে আলোচনা চলছিল। যদিও ম্যাক্রোঁ সরকার নিজেদের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক চাপ সামলে কতটা সহায়তা দিতে পারবে তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।
গত মাসে এক বক্তব্যে, ম্যাক্রোঁ আরও কয়েকটি মিরাজ যুদ্ধবিমান দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। এ ছাড়া ইউক্রেনকে নতুন একটি ব্যাচ অ্যাস্টার–৩০ ক্ষেপণাস্ত্র দেওয়ার অঙ্গীকার করেন।
এ বিষয়ে অবগত দুই ব্যক্তি রয়টার্সকে জানান, রাফাল যুদ্ধবিমান সরবরাহ ১০ বছরের কৌশলগত বিমান–চুক্তির অংশ হবে। এর কয়েকটি ফরাসি মজুত থেকে আসতে পারে, তবে মূল অংশটি দীর্ঘমেয়াদে ইউক্রেনের বহরকে ২৫০টি যুদ্ধবিমানে উন্নীত করার পরিকল্পনার অংশ—যেখানে যুক্তরাষ্ট্রের এফ-১৬ এবং সুইডেনের গ্রিপেনও রয়েছে।
তারা আরও বলেন, জেলেনস্কির এই সফরে আকাশ–প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, ক্ষেপণাস্ত্র এবং অ্যান্টি–ড্রোন প্রযুক্তির আরও চুক্তি হতে পারে। এগুলোর অর্থায়ন কীভাবে হবে তা স্পষ্ট নয়।
উন্নত এসব যুদ্ধবিমান পরিচালনায় পাইলটদের কঠোর প্রশিক্ষণের কারণে সময় লাগবে।
জেলেনস্কির সফরকে সামনে রেখে এক ব্রিফিংয়ে ম্যাক্রোঁর কার্যালয় জানায়, তাদের লক্ষ্য “ফরাসি প্রতিরক্ষা শিল্পের সক্ষমতাকে ইউক্রেনের সুরক্ষায় কাজে লাগানো” এবং রুশ আগ্রাসনের জবাব দিতে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম অর্জনে ইউক্রেনকে সহায়তা করা।
ব্রিটেনের সঙ্গে মিলে ফ্রান্স প্রায় ৩০টি দেশকে নিয়ে একটি জোট গড়ার উদ্যোগ নিয়েছে—যেখানে রাশিয়ার সঙ্গে সম্ভাব্য শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরের পর ইউক্রেন বা তার পশ্চিম সীমান্তে সেনা ও সামরিক সম্পদ পাঠানো হতে পারে। লক্ষ্য হলো ইউক্রেনকে দীর্ঘমেয়াদি সামরিক ও অর্থনৈতিক সহায়তা দিয়ে ভবিষ্যৎ রুশ আগ্রাসন ঠেকানোর সক্ষমতা ধরে রাখা।
Voice24 Admin 






