প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে জাতীয় প্রশিক্ষণ কাউন্সিলের নবম সভায় অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) অনুষ্ঠিত সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন— অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ, আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মো: মোখলেস উর রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খান।
সভায় ক্যাডার কর্মকর্তাদের বুনিয়াদি প্রশিক্ষণের মেয়াদ ছয় মাসের পরিবর্তে চার মাস নির্ধারণ করা হয়েছে। এ মেয়াদের মধ্যে তিন মাস প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানে এবং এক মাস মাঠপর্যায়ে ওরিয়েন্টেশন ও গ্রাম সংযুক্তি অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
পাশাপাশি, কর্মকর্তাদের মাস্টার্স ও পিএইচডি কোর্সে ভর্তির ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৪৫ বছর থেকে বাড়িয়ে ৪৭ বছর নির্ধারণ করা হয়েছে। পিএইচডি কোর্সে অধ্যয়নের ক্ষেত্রে প্রতি বছর তত্ত্বাবধায়কের কাছ থেকে অগ্রগতি সংক্রান্ত প্রত্যয়ন গ্রহণ করে মন্ত্রণালয়ে পাঠাতে হবে। তা না হলে কর্মকর্তাদের বেতন বন্ধ রাখা হবে।
সভায় প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘সরকারি যত প্রশিক্ষণকেন্দ্র আছে, সেগুলোর ওপর মূল্যায়ন করতে হবে। কী ধরনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে, প্রশিক্ষণের ধরন-মান ইত্যাদির মানদণ্ড নির্ধারণ করে ক্যাটাগরি-ভিত্তিক প্রতিটি প্রশিক্ষণকেন্দ্রকে র্যাংকিং করতে হবে এবং নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘একটি স্বাধীন ইউনিট গঠন করতে হবে। তারা সব গবেষণা প্রতিষ্ঠানের ওপর পদ্ধতিগতভাবে, স্বাধীনভাবে মূল্যায়ন করবে। গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোর সামগ্রিক দর্শন জানতে হবে। সেগুলো সঠিকভাবে পরিচালিত হচ্ছে কিনা দেখতে হবে। সরকারি কর্মকর্তারা যারা বিদেশ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে এসেছেন তাদের তথ্য সেখানে থাকবে।’
সভায় সঞ্জীবনী প্রশিক্ষণের নাম পরিবর্তন করে ‘দক্ষতা নবায়ন প্রশিক্ষণ’ নামকরণের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ প্রশিক্ষণ হালনাগাদকৃত কারিকুলামে মাঠপর্যায়ে কোনও সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে আয়োজন করতে হবে। উচ্চশিক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রে কর্মকর্তারা আংশিক বৃত্তিপ্রাপ্ত হলেও প্রেষণ মঞ্জুরের করা যাবে।
এছাড়া কর্মচারীদের সততা ও নৈতিকতা বিকাশে এবং দুর্নীতিবিরোধী মনোভাব তৈরিতে বিভিন্ন প্রশিক্ষণে পুণ্য, নৈতিকতা, আচরণগত বিজ্ঞান, কোড অব কন্ডাক্ট প্রভৃতি বিষয় মডিউলে অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত হয়েছে এবং কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানগুলোর সার্বিক মূল্যায়ন এবং প্রশিক্ষণ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের লক্ষ্যে গবেষণা, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন কার্যক্রম পরিচালনার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
আজকের সভায় অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদকে সভাপতি নির্ধারণ করে একটি নির্বাহী কমিটি (ইসিএনটিসি) গঠন করা হয়েছে।