০৮:২৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৯ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জাতীয় মানবাধিকার কমিশন অধ্যাদেশের খসড়া প্রকাশ

  • Voice24 Admin
  • সময়ঃ ১২:০৫:৫৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • ৫৪৩ Time View
ড. আসিফ নজরুল

সরকার জাতীয় মানবাধিকার কমিশন (এনএইচআরসি) অধ্যাদেশ ২০২৫-এর খসড়া উন্মোচন করেছে, যা মানবাধিকার সুরক্ষা ও আন্তর্জাতিক মানের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়ার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূরর্ণ পদক্ষেপ।
 
ইউএনডিপি জানায়, শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) কক্সবাজার জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) বাস্তবায়িত স্ট্রেনদেনিং ইনস্টিটিউশন, পলিসিস ও সার্ভিসেস প্রকল্পের আওতায় এবং বাংলাদেশে সুইজারল্যান্ড দূতাবাসের সহযোগিতায় ‘জাতীয় মানবাধিকার কমিশন আইন ২০০৯ সংস্কার বিষয়ে অংশীজন পরামর্শ সভা’ শীর্ষক এ অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও সংসদবিষয়ক বিভাগ।

 
নতুন খসড়া অধ্যাদেশটি বিদ্যমান ২০০৯ সালের আইন প্রতিস্থাপন করবে। এতে কমিশনের স্বাধীনতা, অন্তর্ভুক্তি ও জবাবদিহিতা আরও জোরদার করা হয়েছে। পাশাপাশি কমিশনের ম্যান্ডেটকে প্যারিস নীতিমালার সঙ্গে সম্পূর্ণরূপে সামঞ্জস্যপূর্ণ করা হয়েছে এবং গ্লোবাল অ্যালায়েন্স অব ন্যাশনাল হিউম্যান রাইটস ইনস্টিটিউশনস এর মূল সুপারিশগুলো প্রতিফলিত হয়েছে।
 
প্রধান অতিথির বক্তব্যে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেন, ‘রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত ও নাগরিক অংশগ্রহণভিত্তিক মানবাধিকার কমিশনই হতে পারে প্রকৃত স্বাধীন জবাবদিহিমূলক প্রতিষ্ঠান। ’
 
গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান বলেন, ‘আন্তর্জাতিক মান পূরণ ও জনআস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠায় স্বাধীন ও অন্তর্ভুক্তিমূলক মানবাধিকার কমিশন অপরিহার্য। ’
 
ইউএনডিপি বাংলাদেশের আবাসিক প্রতিনিধি স্টেফান লিলার উদ্বোধনী বক্তব্যে বলেন, ‘শাসনব্যবস্থা উন্নয়ন ও মানবাধিকার সুরক্ষা ইউএনডিপির মূল অগ্রাধিকার। একটি শক্তিশালী ও কার্যকর মানবাধিকার কমিশন গড়ে তুলতে আমরা বাংলাদেশের জনগণের পাশে আছি। ’
 
বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইস রাষ্ট্রদূত রেটো রেংগ্লি বলেন, ‘জাতীয় মানবাধিকার কমিশন আইন সংশোধন কমিশনের স্বাধীনতা, কার্যকারিতা ও গ্রহণযোগ্যতা নিশ্চিত করার জন্য অত্যন্ত জরুরি। একটি শক্তিশালী মানবাধিকার কমিশন নাগরিক অধিকার সুরক্ষার পাশাপাশি আস্থা ও জবাবদিহিতা বাড়াবে, গণতন্ত্রকে সুসংহত করবে। ’
 
বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইডেনের রাষ্ট্রদূত নিকোলাস উইক্স বলেন, ‘স্বাধীন মানবাধিকার প্রতিষ্ঠান গণতান্ত্রিক সমাজের মূলভিত্তি। মানবাধিকার সুরক্ষা, আইনের শাসন জোরদার এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন এগিয়ে নিতে বাংলাদেশ যে সংস্কার উদ্যোগ নিয়েছে, সুইডেন তা পূর্ণ সমর্থন করে। ’ 
 
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের বিশেষ পরামর্শক ব্যারিস্টার তানিম হোসেন শাওন। এ ছাড়া জাতিসংঘ মানবাধিকার হাইকমিশনারের কার্যালয়, কক্সবাজারের হিউম্যান রাইটস অফিসার ইফতিখার সাঈদ আলী জাতিসংঘের অবস্থানপত্র তুলে ধরেন।
 
সভায় আরও বক্তব্য দেন ইউএনডিপি বাংলাদেশের সিনিয়র রুল অব ল’, জাস্টিস ও সিকিউরিটি অ্যাডভাইজর রোমানা শোয়েগার এবং বলপূর্বক গুম তদন্ত কমিশনের চেয়ারম্যান বিচারপতি মঈনুল ইসলাম চৌধুরী।  
 
এর আগে সিলেট ও খুলনায় একই ধরনের পরামর্শসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিভাগীয় পর্যায়ে আরও কয়েকটি পরামর্শ সভা অনুষ্ঠিত হবে। সবশেষে ঢাকায় জাতীয় সংলাপের মাধ্যমে সংশোধনীর চূড়ান্ত খসড়া প্রণয়ন করা হবে।
 
জাতীয় মানবাধিকার কমিশন (এনএইচআরসি) অধ্যাদেশ ২০২৫ এর খসড়া সম্পর্কে নাগরিকদের মতামত ও মন্তব্য আগামী ১৮ সেপ্টেম্বরের মধ্যে [email protected] ঠিকানায় পাঠানোর জন্য আহ্বান জানানো হচ্ছে।
 
টিআর/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

ট্যাগঃ

জাতীয় মানবাধিকার কমিশন অধ্যাদেশের খসড়া প্রকাশ

সময়ঃ ১২:০৫:৫৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
ড. আসিফ নজরুল

সরকার জাতীয় মানবাধিকার কমিশন (এনএইচআরসি) অধ্যাদেশ ২০২৫-এর খসড়া উন্মোচন করেছে, যা মানবাধিকার সুরক্ষা ও আন্তর্জাতিক মানের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়ার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূরর্ণ পদক্ষেপ।
 
ইউএনডিপি জানায়, শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) কক্সবাজার জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) বাস্তবায়িত স্ট্রেনদেনিং ইনস্টিটিউশন, পলিসিস ও সার্ভিসেস প্রকল্পের আওতায় এবং বাংলাদেশে সুইজারল্যান্ড দূতাবাসের সহযোগিতায় ‘জাতীয় মানবাধিকার কমিশন আইন ২০০৯ সংস্কার বিষয়ে অংশীজন পরামর্শ সভা’ শীর্ষক এ অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও সংসদবিষয়ক বিভাগ।

 
নতুন খসড়া অধ্যাদেশটি বিদ্যমান ২০০৯ সালের আইন প্রতিস্থাপন করবে। এতে কমিশনের স্বাধীনতা, অন্তর্ভুক্তি ও জবাবদিহিতা আরও জোরদার করা হয়েছে। পাশাপাশি কমিশনের ম্যান্ডেটকে প্যারিস নীতিমালার সঙ্গে সম্পূর্ণরূপে সামঞ্জস্যপূর্ণ করা হয়েছে এবং গ্লোবাল অ্যালায়েন্স অব ন্যাশনাল হিউম্যান রাইটস ইনস্টিটিউশনস এর মূল সুপারিশগুলো প্রতিফলিত হয়েছে।
 
প্রধান অতিথির বক্তব্যে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেন, ‘রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত ও নাগরিক অংশগ্রহণভিত্তিক মানবাধিকার কমিশনই হতে পারে প্রকৃত স্বাধীন জবাবদিহিমূলক প্রতিষ্ঠান। ’
 
গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান বলেন, ‘আন্তর্জাতিক মান পূরণ ও জনআস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠায় স্বাধীন ও অন্তর্ভুক্তিমূলক মানবাধিকার কমিশন অপরিহার্য। ’
 
ইউএনডিপি বাংলাদেশের আবাসিক প্রতিনিধি স্টেফান লিলার উদ্বোধনী বক্তব্যে বলেন, ‘শাসনব্যবস্থা উন্নয়ন ও মানবাধিকার সুরক্ষা ইউএনডিপির মূল অগ্রাধিকার। একটি শক্তিশালী ও কার্যকর মানবাধিকার কমিশন গড়ে তুলতে আমরা বাংলাদেশের জনগণের পাশে আছি। ’
 
বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইস রাষ্ট্রদূত রেটো রেংগ্লি বলেন, ‘জাতীয় মানবাধিকার কমিশন আইন সংশোধন কমিশনের স্বাধীনতা, কার্যকারিতা ও গ্রহণযোগ্যতা নিশ্চিত করার জন্য অত্যন্ত জরুরি। একটি শক্তিশালী মানবাধিকার কমিশন নাগরিক অধিকার সুরক্ষার পাশাপাশি আস্থা ও জবাবদিহিতা বাড়াবে, গণতন্ত্রকে সুসংহত করবে। ’
 
বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইডেনের রাষ্ট্রদূত নিকোলাস উইক্স বলেন, ‘স্বাধীন মানবাধিকার প্রতিষ্ঠান গণতান্ত্রিক সমাজের মূলভিত্তি। মানবাধিকার সুরক্ষা, আইনের শাসন জোরদার এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন এগিয়ে নিতে বাংলাদেশ যে সংস্কার উদ্যোগ নিয়েছে, সুইডেন তা পূর্ণ সমর্থন করে। ’ 
 
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের বিশেষ পরামর্শক ব্যারিস্টার তানিম হোসেন শাওন। এ ছাড়া জাতিসংঘ মানবাধিকার হাইকমিশনারের কার্যালয়, কক্সবাজারের হিউম্যান রাইটস অফিসার ইফতিখার সাঈদ আলী জাতিসংঘের অবস্থানপত্র তুলে ধরেন।
 
সভায় আরও বক্তব্য দেন ইউএনডিপি বাংলাদেশের সিনিয়র রুল অব ল’, জাস্টিস ও সিকিউরিটি অ্যাডভাইজর রোমানা শোয়েগার এবং বলপূর্বক গুম তদন্ত কমিশনের চেয়ারম্যান বিচারপতি মঈনুল ইসলাম চৌধুরী।  
 
এর আগে সিলেট ও খুলনায় একই ধরনের পরামর্শসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিভাগীয় পর্যায়ে আরও কয়েকটি পরামর্শ সভা অনুষ্ঠিত হবে। সবশেষে ঢাকায় জাতীয় সংলাপের মাধ্যমে সংশোধনীর চূড়ান্ত খসড়া প্রণয়ন করা হবে।
 
জাতীয় মানবাধিকার কমিশন (এনএইচআরসি) অধ্যাদেশ ২০২৫ এর খসড়া সম্পর্কে নাগরিকদের মতামত ও মন্তব্য আগামী ১৮ সেপ্টেম্বরের মধ্যে [email protected] ঠিকানায় পাঠানোর জন্য আহ্বান জানানো হচ্ছে।
 
টিআর/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।