চোকার্স তো আর তাদের এমনি এমনিই বলা হয় না। এর পেছনে ইতিহাস আছে। যা ঘুরে ফেরে তাদের তাড়িয়ে বেড়ায়। বছরের পর বছর, টুর্নামেন্টের পর টুর্নামেন্ট গুরুত্বপূর্ণ সময়ে খেই হারিয়ে এসেছে দক্ষিণ আফ্রিকা।
চাপের মুহূর্তে, গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ভেঙে পড়ার নজীর তো কম নেই তাদের। যে কারণে নামের সঙ্গে জুড়ে গেছে ‘চোকার্স’ ট্যাগ। আরো একবার দক্ষিণ আফ্রিকা প্রমাণ করলো সহজ ম্যাচ কিভাবে হাতছাড়া করে হারতে হয়।
জিম্বাবুয়ের হারারেতে নিউ জিল্যান্ডকে হারিয়ে ত্রিদেশীয় সিরিজের ট্রফি জিততে শেষ ৬ বলে মাত্র ৭ রান লাগত তাদের। হাতে ৬ উইকেট। অথচ ওই ম্যাচ তারা হারল ৩ রানে। স্রেফ অবিশ্বাস্য। অদ্ভুত।
নিউ জিল্যান্ডের দেওয়া ১৮১ রানের লক্ষ্য তাড়ায় দক্ষিণ আফ্রিকার ১৯ ওভারে রান ৪ উইকেটে ১৭৪। ডেওয়াল্ড ব্রেভিস ১৪ বলে ৩১ রান করে ক্রিজে। অপরপ্রান্তে জর্জ লিন্ডে ৯ বলে ১০ রান তুলে নিয়েছেন। থিতু হওয়া দুই ব্যাটসম্যান অনায়েসে রান তুলে নেবেন এমনটাই মনে হচ্ছিল। কিন্তু সমীকরণ পাল্টে দিলেন ম্যাট হেনরি।
ব্রেভিস প্রথম বলে কোনো রান নিতে পারেননি। দ্বিতীয় বলে তার ডিপ মিড উইকেটে অসাধারণ ক্যাচ নেন ব্রেসওয়েল। পরের বলে আবার ক্যাচ উঠলেও নিতে পারেননি ব্রেসওয়েল। স্কোরবোর্ডে ২ রান যোগ করেন নতুন ব্যাটসম্যান করবিন ব্রচ। চতুর্থ বলে ১ রান নিয়ে প্রান্ত বদল করেন ব্রচ। সমীকরণ তখন ২ বলে ৪ রান।
পঞ্চম বলে আবার নাটক। এবার লিন্ডে ডার্ল মিচেলের দুর্দান্ত এক ক্যাচে ফেরেন সাজঘরে। ডট বলের সঙ্গে কিউইরা পেয়ে যায় উইকেটের স্বাদ। শেষ বলে জয়ের জন্য প্রয়োজন বাউন্ডারি। কিন্তু হেনরির গোলায় নতুন ব্যাটসম্যান মুথুসামি ১ রানের বেশি নিতে পারেননি।
ফসকে যাওয়া ম্যাচ ৩ রানে জিতে নিউ জিল্যান্ড প্রমাণ করেছে হারার আগে তারা হারে না। শেষ বল পর্যন্ত লড়াই করার মানসিকতা এখনও জিইয়ে রেখেছে তারা। ১৯ রানে ২ উইকেট নিয়ে ম্যাচের নায়ক হেনরি। ১০ উইকেট নিয়ে সিরিজ সেরাও হয়েছেন তিনি।
ব্যাটিংয়ে তাদের হয়ে ৪৭ রানের দুটি ইনিংস খেলেন ডেভন কনওয়ে ও রাচীন রাবিন্দ্র। ৩০ রান করেন টিম সেইফার্ট। এছাড়া ডার্ল মিচেল ১৬ ও ব্রেসওয়েলের ব্যাট থেকে আসে ১৫ রান।
জবাব দিতে নেমে দক্ষিণ আফ্রিকা ৯.৪ ওভারে ৯২ রান তুলে নেয়। ড্রি প্রিটোরিয়াস ৫১ এবং রেজা হেনড্রিকস ৩৭ রান করেন। এরপর ব্রেভিসের ঝড়ো ৩১, ডুসেনের ১৯ রানে লক্ষ্যের পথে ছুটছিল তারা।
কিন্তু সব সমীকরণ পাল্টে যায় শেষ ওভারে। হেনরির দারুণ বোলিংয়ে প্রোটিয়ার তীরে এসে তরি ডুবিয়ে প্রমাণ করেছে, এমন ম্যাচ হার শুধুমাত্র তাদের পক্ষেই সম্ভব।