অন্তর্বর্তী সরকারের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, “আমরা ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে সরাতে পেরেছি, কিন্তু ফ্যাসিবাদী কাঠামো এখনো রয়ে গেছে। এই কাঠামোর বিরুদ্ধে লড়াইটা আমাদের সবার।”
রবিবার (২৭ জুলাই) গণ বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত “জুলাই স্মৃতিচারণ ও আলোচনা অনুষ্ঠান-২০২৫”-এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের পিএইচএ ভবন মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠানের আয়োজিন করা হয়।
ফরিদা আখতার বলেন, “জুলাই আন্দোলনে গবি শিক্ষার্থীদের স্মৃতি এবং অভিজ্ঞতা শুনে আপ্লুত হয়েছি। পুলিশ যেভাবে গুলি চালিয়েছে, লাঠিপেটা করেছে—তা সহ্য করা কঠিন। শিক্ষার্থীদের অভিজ্ঞতা শুনে বলা যায় এই আন্দোলন কেবল তাৎক্ষণিক কোনো ক্ষোভ নয়, বরং এটা একটি চিন্তাশীল, আদর্শ নির্ভর প্রতিবাদ। রাজপথে শিক্ষার্থীদের অকুতোভয় এবং সংগ্রাম প্রমাণ করে তাদের শিক্ষা, চেতনা ও সাহস সবকিছুতেই ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর আদর্শের প্রতিফলন।”
তিনি বলেন, “আমাদের সঙ্গে পুরো বিশ্ব জড়িয়ে আছে। আমাদের আন্তর্জাতিক রাজনীতি, প্রতিবেশী রাষ্ট্র, সাম্রাজ্যবাদ—সবকিছুর প্রতি সতর্ক থাকতে হবে। সামনের দিনগুলো হয়তো আরো কঠিন হতে পারে। আমরা একসঙ্গে নতুন একটি বাংলাদেশ গড়ব।”
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি আন্দোলনের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান এবং আহত শিক্ষার্থীদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেন। এসময় জুলাই আন্দোলনে আহত নয়জন শিক্ষার্থীকে সম্মাননা স্মারক ও উত্তরীয় প্রদান করেন তিনি।
কলা ও সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক নিলুফার সুলতানার সভাপতিত্বে ও ফার্মেসী বিভাগের প্রভাষক তানিয়া আহমেদের সঞ্চালনায় এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আবুল হোসেন।
এ-সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. ওহিদুজ্জামান, বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভাগীয় প্রধান, শিক্ষক-শিক্ষিকা, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা কর্মচারী বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আবুল হোসেন বলেন, “দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করছিল, তখন তাদের পাশে সর্বপ্রথম দাঁড়ায় আমাদের শিক্ষার্থীরা। অন্যায়ের বিরুদ্ধে গবি শিক্ষার্থীরা সর্বদাই সোচ্চার। ভবিষ্যতেও তাদের এ লড়াই জারি থাকবে বলে আশা করি।”
শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে তিনি বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্ঞানের প্রবেশদ্বার সংলগ্ন শেখ মুজিবর রহমানের ভাস্কর্য অপসারণ করার বিষয়ে ট্রাস্টি বোর্ডের কাছে জানানো হবে। গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ পুরুষ ড. জাফরুল্লাহ চৌধুরী আদর্শ, দর্শন এবং লক্ষ্য বাস্তবায়নের দিকে এগিয়ে যাব।”
অনুষ্ঠানের শুরুতে প্রদর্শিত হয় গবি শিক্ষার্থীদের জুলাই গণ-আন্দোলনকে ঘিরে নির্মিত একটি প্রামাণ্যচিত্র। এরপর আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীরা তাঁদের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন।
পরে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে জুলাই আন্দোলনের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।