১১:৫৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৮ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

চবিতে আবাসন ভাতার দাবিতে প্রশাসনিক ভবনে তালা

  • Voice24 Admin
  • সময়ঃ ১২:০৫:১৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৮ অগাস্ট ২০২৫
  • ৫৬৫ Time View

শতভাগ আবাসন অথবা আবাসন ভাতাসহ পাঁচ দফা দাবিতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) প্রশাসনিক ভবনে তালা দিয়ে বিক্ষোভ করছেন শিক্ষার্থীরা।

রবিবার (১৭ আগস্ট) দুপুর দেড়টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে এ বিক্ষোভ শুরু হয়। পরে ২টায় প্রশাসনিক ভবনের উভয় প্রান্তে তালা ঝুলিয়ে দেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। যতক্ষণ পর্যন্ত প্রশাসনিক ভবন থেকে কেউ আলোচনার না আসছেন, ততক্ষণ পর্যন্ত ভবন তালাবদ্ধ থাকবে বলে জানান আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। 

এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘ঢাবি পায় জবি পায়, চবি কেনো মুলা পায়?’ ‘মুলা না আবাসন, আবাসন আবাসন’, ‘আবাসন ভাতা দে, নইলে গদি ছাইড়া দে’, ‘আবাসন ভাতার অধিকার, রুখে দেওয়ার সাধ্য কার?’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।

এতে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন উপাচার্য, উপ-উপাচার্যসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। পরে রাত ৯টায় প্রশাসনিক ভবনের তালা খুলে দেন শিক্ষার্থীরা। তবে এর আগে বিকেল ৫টায় অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে বের হন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার ও উপ-উপাচার্য (অ্যাকাডেমিক) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান। 

তাদের দাবিগুলো হলো- আজকেই সিন্ডিকেট সভা করে আধুনিক এবং বহুতল হল নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়ে রূপরেখা প্রকাশ করতে হবে; শতভাগ আবাসন না হওয়া পর্যন্ত অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের উপযুক্ত আবাসন ভাতা প্রদান করা বাধ্যতামূলক করতে হবে; সব হলে অবৈধভাবে অবস্থানকারীদের তালিকা তৈরি করে অনতিবিলম্বে তাদের হলের সিট বাতিল করে তাদের হল প্রস্থান করতে বাধ্য করতে হবে; হলের আবেদনে এ যাবতকালে যতবার ১০০ টাকা করে নিয়ে হলের ফলাফল নিয়ে প্রহসন করে যেসব শিক্ষার্থীকে সিট দেওয়া হয়নি, তাদের ১০০ টাকা অনতিবিলম্বে ফেরত দিতে হবে; মেয়েদের হলে ডাবলিং প্রথা বন্ধ করে ডেকার বেড পদ্ধতি চালু করতে হবে।

আন্দোলনে অংশ নেওয়া রাজনীতিবিজ্ঞান বিভাগের ২০২২-২৩ সেশনের শিক্ষার্থী রবিউল ইসলাম শাফি বলেন, “আমরা দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছি, হয় শতভাগ আবাসন দিবে; নয় আবাসন ভাতা দিবে। কিন্তু প্রশাসনের যেন টনক নড়ছে না। বিশ্ববিদ্যালয়ে মাত্র ২২ শতাংশ শিক্ষার্থীর আবাসন সুবিধা রয়েছে। বাকি বিপুল পরিমাণ শিক্ষার্থীকে নিয়ে কোনোই ভাবনা নেই প্রশাসনের। এত এত বাজেট আসে, সেগুলো কি করে?”

তিনি বলেন, “আমাদের এখন একটাই দাবি, অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের আবাসন ভাতা প্রদান করতে হবে। এছাড়া আমরা থামব না।”

২০২২-২৩ সেশনের রাজনীতিবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মো. হাবিবুর রহমরান সুমন বলেন, “আবাসিন নিয়ে শুরু থেকে আন্দোলন করলেও প্রশাসন শুধু আমাদের মূলা ঝুলাচ্ছে। এবার আমরা আমাদের আবাসন ভাতা নিয়েই ক্ষান্ত হব। আবাসন ভাতা প্রদানের সিদ্ধান্ত না জানানো পর্যন্ত আমাদের এ আন্দোলন চলবে।”

তিনি বলেন, “ঢাবিতে আবাসন ভাতা দিচ্ছে। আর জবি স্বায়ত্তশাসিত না হয়েও সেখানে আবাসন ভাতা দিলে চবিতে কোনো দেওয়া হবে না?”

২০২২-২৩ সেশনের নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থী মো. উলফাতুর রহমান রাকিব বলেন, “আমরা পাঁচ দফা দাবিতে দুপুর দেড়টা থেকে আন্দোলন শুরু করি। ২টায় প্রশাসনিক ভবনে তালা দেই। রাত ৯টায় আমরা তালা খুলে দিয়েছি। আমাদের পাঁচ দাবির মধ্যে তিনটি দাবি প্রশাসন মেনে নিয়েছে। বাকি দুই দাবির (হয় শতভাগ আবাসন নয় আবাসন ভাতা) বিষয়ে উপাচার্য স্যার আশ্বাস দিয়ে বলেছেন, আগামী ২১ আগস্ট এ বিষয়ে ইউজিসিকে সরাসরি জানাবেন। এরপর তা জেনে ২২ আগস্ট আমরা সিদ্ধান্ত নেব যে আমাদের পরবর্তীতে কী পদক্ষেপ হবে।”

এদিকে, রাত ৯টায় বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীদের সামনে বক্তব্য দেন উপাচার্য। তিনি বলেন, “আমরা অগ্রাধিকারের তালিকায় চাকসু, আবাসন এগুলো রেখেছি এবং সেই অনুযায়ী কাজ করছি। এগুলো প্রক্রিয়াধীন আছে। তবে কবে নাগাদ হবে সেটা আমরা বলতে পারব না। তবে আমরা এটা পাব।”

আবাসন ভাতার ব্যাপারে তিনি বলেন, “আমাদের তো সমস্যা নেই শিক্ষার্থীদের ভাতা দিতে। কিন্তু একটা বড় সোর্স লাগবে। আমাদের সোর্সের অভাব রয়েছে। ছাত্রদের আবাসন ভাতার জন্য আমি ২১ আগস্ট ইউজিসির অফিসে গিয়ে বিস্তারিত কথা বলব।”

ট্যাগঃ

টিভিতে আজকের খেলা (১২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫)

চবিতে আবাসন ভাতার দাবিতে প্রশাসনিক ভবনে তালা

সময়ঃ ১২:০৫:১৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৮ অগাস্ট ২০২৫

শতভাগ আবাসন অথবা আবাসন ভাতাসহ পাঁচ দফা দাবিতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) প্রশাসনিক ভবনে তালা দিয়ে বিক্ষোভ করছেন শিক্ষার্থীরা।

রবিবার (১৭ আগস্ট) দুপুর দেড়টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে এ বিক্ষোভ শুরু হয়। পরে ২টায় প্রশাসনিক ভবনের উভয় প্রান্তে তালা ঝুলিয়ে দেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। যতক্ষণ পর্যন্ত প্রশাসনিক ভবন থেকে কেউ আলোচনার না আসছেন, ততক্ষণ পর্যন্ত ভবন তালাবদ্ধ থাকবে বলে জানান আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। 

এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘ঢাবি পায় জবি পায়, চবি কেনো মুলা পায়?’ ‘মুলা না আবাসন, আবাসন আবাসন’, ‘আবাসন ভাতা দে, নইলে গদি ছাইড়া দে’, ‘আবাসন ভাতার অধিকার, রুখে দেওয়ার সাধ্য কার?’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।

এতে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন উপাচার্য, উপ-উপাচার্যসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। পরে রাত ৯টায় প্রশাসনিক ভবনের তালা খুলে দেন শিক্ষার্থীরা। তবে এর আগে বিকেল ৫টায় অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে বের হন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার ও উপ-উপাচার্য (অ্যাকাডেমিক) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান। 

তাদের দাবিগুলো হলো- আজকেই সিন্ডিকেট সভা করে আধুনিক এবং বহুতল হল নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়ে রূপরেখা প্রকাশ করতে হবে; শতভাগ আবাসন না হওয়া পর্যন্ত অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের উপযুক্ত আবাসন ভাতা প্রদান করা বাধ্যতামূলক করতে হবে; সব হলে অবৈধভাবে অবস্থানকারীদের তালিকা তৈরি করে অনতিবিলম্বে তাদের হলের সিট বাতিল করে তাদের হল প্রস্থান করতে বাধ্য করতে হবে; হলের আবেদনে এ যাবতকালে যতবার ১০০ টাকা করে নিয়ে হলের ফলাফল নিয়ে প্রহসন করে যেসব শিক্ষার্থীকে সিট দেওয়া হয়নি, তাদের ১০০ টাকা অনতিবিলম্বে ফেরত দিতে হবে; মেয়েদের হলে ডাবলিং প্রথা বন্ধ করে ডেকার বেড পদ্ধতি চালু করতে হবে।

আন্দোলনে অংশ নেওয়া রাজনীতিবিজ্ঞান বিভাগের ২০২২-২৩ সেশনের শিক্ষার্থী রবিউল ইসলাম শাফি বলেন, “আমরা দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছি, হয় শতভাগ আবাসন দিবে; নয় আবাসন ভাতা দিবে। কিন্তু প্রশাসনের যেন টনক নড়ছে না। বিশ্ববিদ্যালয়ে মাত্র ২২ শতাংশ শিক্ষার্থীর আবাসন সুবিধা রয়েছে। বাকি বিপুল পরিমাণ শিক্ষার্থীকে নিয়ে কোনোই ভাবনা নেই প্রশাসনের। এত এত বাজেট আসে, সেগুলো কি করে?”

তিনি বলেন, “আমাদের এখন একটাই দাবি, অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের আবাসন ভাতা প্রদান করতে হবে। এছাড়া আমরা থামব না।”

২০২২-২৩ সেশনের রাজনীতিবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মো. হাবিবুর রহমরান সুমন বলেন, “আবাসিন নিয়ে শুরু থেকে আন্দোলন করলেও প্রশাসন শুধু আমাদের মূলা ঝুলাচ্ছে। এবার আমরা আমাদের আবাসন ভাতা নিয়েই ক্ষান্ত হব। আবাসন ভাতা প্রদানের সিদ্ধান্ত না জানানো পর্যন্ত আমাদের এ আন্দোলন চলবে।”

তিনি বলেন, “ঢাবিতে আবাসন ভাতা দিচ্ছে। আর জবি স্বায়ত্তশাসিত না হয়েও সেখানে আবাসন ভাতা দিলে চবিতে কোনো দেওয়া হবে না?”

২০২২-২৩ সেশনের নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থী মো. উলফাতুর রহমান রাকিব বলেন, “আমরা পাঁচ দফা দাবিতে দুপুর দেড়টা থেকে আন্দোলন শুরু করি। ২টায় প্রশাসনিক ভবনে তালা দেই। রাত ৯টায় আমরা তালা খুলে দিয়েছি। আমাদের পাঁচ দাবির মধ্যে তিনটি দাবি প্রশাসন মেনে নিয়েছে। বাকি দুই দাবির (হয় শতভাগ আবাসন নয় আবাসন ভাতা) বিষয়ে উপাচার্য স্যার আশ্বাস দিয়ে বলেছেন, আগামী ২১ আগস্ট এ বিষয়ে ইউজিসিকে সরাসরি জানাবেন। এরপর তা জেনে ২২ আগস্ট আমরা সিদ্ধান্ত নেব যে আমাদের পরবর্তীতে কী পদক্ষেপ হবে।”

এদিকে, রাত ৯টায় বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীদের সামনে বক্তব্য দেন উপাচার্য। তিনি বলেন, “আমরা অগ্রাধিকারের তালিকায় চাকসু, আবাসন এগুলো রেখেছি এবং সেই অনুযায়ী কাজ করছি। এগুলো প্রক্রিয়াধীন আছে। তবে কবে নাগাদ হবে সেটা আমরা বলতে পারব না। তবে আমরা এটা পাব।”

আবাসন ভাতার ব্যাপারে তিনি বলেন, “আমাদের তো সমস্যা নেই শিক্ষার্থীদের ভাতা দিতে। কিন্তু একটা বড় সোর্স লাগবে। আমাদের সোর্সের অভাব রয়েছে। ছাত্রদের আবাসন ভাতার জন্য আমি ২১ আগস্ট ইউজিসির অফিসে গিয়ে বিস্তারিত কথা বলব।”