০৩:৫১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৮ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বিচার ও সংস্কারকে নির্বাচনের মুখোমুখি দাঁড় করানো গ্রহণযোগ্য হবে না: সাকি

  • Voice24 Admin
  • সময়ঃ ১২:০৪:১৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ অগাস্ট ২০২৫
  • ৫৫৪ Time View

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেছেন, “বিচার, সংস্কার, নির্বাচন এই মুহূর্তে বাংলাদেশের প্রধান জাতীয় স্বার্থ। বিচার এবং সংস্কারকে নির্বাচনের মুখোমুখি দাঁড় করানো কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য হবে না।” 

শুক্রবার (২৯ আগস্ট) সকালে গণসংহতি আন্দোলনের ২৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। 

জোনায়েদ সাকি বলেন, “নির্বাচন আমাদের সংস্কার সম্পন্ন করার জন্যই দরকার। বিচারকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য নির্বাচন দরকার। গণতান্ত্রিক উত্তরণের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। নির্বাচনের যে অপরিহার্যতা আজকে আমাদের সবাইকে উপলব্ধি করতে হবে। যথার্থ সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। একটা জাতীয় সনদ তৈরি হচ্ছে এই সনদ আমাদের বাস্তবায়ন করতে হবে। আমরা মনে করি, জাতীয় সনদের আইনি বাধ্যবাধকতা এবং তা বাস্তবায়নের পথ নিয়ে আমরা অতি দ্রুত ঐক্যমতে পৌঁছতে পারব। নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টিতে আন্দোলনকারী রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐক্য তৈরি হবে।” 

তিনি বলেন, “সরকার এবং নির্বাচন কমিশন আন্দোলনকারী দলগুলোকে নিয়ে একটি মনিটরিং কমিটি করবে। নির্বাচনের পরিবেশ কোথাও বিঘ্নিত হলে সম্মিলিতভাবে আমরা তা প্রতিরোধ করতে পারব। অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মধ্য দিয়ে আমরা বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণ ঘটাতে চাই।” 

জোনায়েদ সাকি বলেন, ২৪-এর গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচার সরকারের পতন ঘটেছে। তবে, ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচারী ব্যবস্থা পুরোপুরিভাবে আমরা উচ্ছেদ করতে পারেনি। এটা একটা লড়াইয়ের ব্যাপার। ফ্যাসিবাদী সরকারের পতন ঘটলেই যে পুরো ব্যবস্থা বদলাবে না, এই কথা আমরা আগেই বলেছিলাম। আমরা বারবার বলছিলাম, সরকার এবং শাসন ব্যবস্থা বদলাবে। শাসন ব্যবস্থা ও সাংবিধানিক কাঠামোর যদি পরিবর্তন না হয়, তাহলে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার যে আকাঙ্খা তা কখনই অর্জিত হবে না। সেই লক্ষে আমরা সংবিধান ক্ষমতা কাঠামা সংস্কারের কথা বলেছি।” 

গণসংহতি আন্দোলনের এই নেতা বলেন, “১৯৭২ সালের সংবিধান ১৯৭১ সালের মানুষের গণতান্ত্রিক আকাঙ্খাকে ধারণ করেনি। সেই সাংবিধানিক ক্ষমতার কাঠামো ছিল প্রবলভাবে স্বৈরতান্ত্রিক। সমস্ত ক্ষমতা এক ব্যাক্তির হাতে কেন্দ্রীভূত করা হয়েছিল। ৭২ সালের সাংবিধানিক ক্ষমতা কাঠামোর হাত ধরেই দেশে একের পর এক স্বৈরচারী শাসন আমরা দেখেছি, হত্যাযজ্ঞ দেখেছি, সব শেষে ফ্যাসিস্ট শাসন দেখেছি। কাজেই সেই কাঠামোগত বদলটা খুব দরকার। 

তিনি বলেন, এখনো আমরা দেখছি, আওয়ামী লীগ এবং তার সহযোগী শক্তি, তারা নানাভাবে এই গণঅভ্যুত্থান ও আত্মত্যাগকে অস্বীকার কারার চেষ্টা করছে। তারা যেভাবে হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে সেটা অস্বীকার করার চেষ্টা করেছে। মানুষের এই আত্মত্যাগকে অস্বীকার করে তাদের ফ্যাসিস্ট শাসনকে এখনো জায়েজ করার চেষ্টা করছে। এই নির্লজ্জতা রীতিমত মানুষের সব কল্পনার সীমাকে ছাড়িয়ে যাচ্ছে।” 

জোনায়েদ সাকি বলেন, “জনগণ চায় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা, অধিকার এবং মর্যাদার নিশ্চিয়তা। আমরা যে কোনো ধরনের অন্যায়কে সমর্থন করি না। আমরা মনে করি, ফ্যাসীবাদীদের সব ষড়যন্ত্র আমাদের রুখে দিতে হবে। ষড়যন্ত্র রুখতে গেলে অবশ্যই আমাদের আইন অনুযায়ী, গণতান্ত্রিক অধিকার বজায় রাখতে হবে। তা না হলে আমরা নিজেরাই ফ্যাসিবাদের খপ্পরে পড়ব। আমরা মনে করি, অপশক্তি আমাদের দেশের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রাকে রুখতে পারবে না। 

এসময় উপস্থিত ছিলেন গণসংহতি আন্দোলনের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতাকর্মীরা।

ট্যাগঃ

বিচার ও সংস্কারকে নির্বাচনের মুখোমুখি দাঁড় করানো গ্রহণযোগ্য হবে না: সাকি

সময়ঃ ১২:০৪:১৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ অগাস্ট ২০২৫

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেছেন, “বিচার, সংস্কার, নির্বাচন এই মুহূর্তে বাংলাদেশের প্রধান জাতীয় স্বার্থ। বিচার এবং সংস্কারকে নির্বাচনের মুখোমুখি দাঁড় করানো কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য হবে না।” 

শুক্রবার (২৯ আগস্ট) সকালে গণসংহতি আন্দোলনের ২৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। 

জোনায়েদ সাকি বলেন, “নির্বাচন আমাদের সংস্কার সম্পন্ন করার জন্যই দরকার। বিচারকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য নির্বাচন দরকার। গণতান্ত্রিক উত্তরণের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। নির্বাচনের যে অপরিহার্যতা আজকে আমাদের সবাইকে উপলব্ধি করতে হবে। যথার্থ সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। একটা জাতীয় সনদ তৈরি হচ্ছে এই সনদ আমাদের বাস্তবায়ন করতে হবে। আমরা মনে করি, জাতীয় সনদের আইনি বাধ্যবাধকতা এবং তা বাস্তবায়নের পথ নিয়ে আমরা অতি দ্রুত ঐক্যমতে পৌঁছতে পারব। নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টিতে আন্দোলনকারী রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐক্য তৈরি হবে।” 

তিনি বলেন, “সরকার এবং নির্বাচন কমিশন আন্দোলনকারী দলগুলোকে নিয়ে একটি মনিটরিং কমিটি করবে। নির্বাচনের পরিবেশ কোথাও বিঘ্নিত হলে সম্মিলিতভাবে আমরা তা প্রতিরোধ করতে পারব। অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মধ্য দিয়ে আমরা বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণ ঘটাতে চাই।” 

জোনায়েদ সাকি বলেন, ২৪-এর গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচার সরকারের পতন ঘটেছে। তবে, ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচারী ব্যবস্থা পুরোপুরিভাবে আমরা উচ্ছেদ করতে পারেনি। এটা একটা লড়াইয়ের ব্যাপার। ফ্যাসিবাদী সরকারের পতন ঘটলেই যে পুরো ব্যবস্থা বদলাবে না, এই কথা আমরা আগেই বলেছিলাম। আমরা বারবার বলছিলাম, সরকার এবং শাসন ব্যবস্থা বদলাবে। শাসন ব্যবস্থা ও সাংবিধানিক কাঠামোর যদি পরিবর্তন না হয়, তাহলে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার যে আকাঙ্খা তা কখনই অর্জিত হবে না। সেই লক্ষে আমরা সংবিধান ক্ষমতা কাঠামা সংস্কারের কথা বলেছি।” 

গণসংহতি আন্দোলনের এই নেতা বলেন, “১৯৭২ সালের সংবিধান ১৯৭১ সালের মানুষের গণতান্ত্রিক আকাঙ্খাকে ধারণ করেনি। সেই সাংবিধানিক ক্ষমতার কাঠামো ছিল প্রবলভাবে স্বৈরতান্ত্রিক। সমস্ত ক্ষমতা এক ব্যাক্তির হাতে কেন্দ্রীভূত করা হয়েছিল। ৭২ সালের সাংবিধানিক ক্ষমতা কাঠামোর হাত ধরেই দেশে একের পর এক স্বৈরচারী শাসন আমরা দেখেছি, হত্যাযজ্ঞ দেখেছি, সব শেষে ফ্যাসিস্ট শাসন দেখেছি। কাজেই সেই কাঠামোগত বদলটা খুব দরকার। 

তিনি বলেন, এখনো আমরা দেখছি, আওয়ামী লীগ এবং তার সহযোগী শক্তি, তারা নানাভাবে এই গণঅভ্যুত্থান ও আত্মত্যাগকে অস্বীকার কারার চেষ্টা করছে। তারা যেভাবে হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে সেটা অস্বীকার করার চেষ্টা করেছে। মানুষের এই আত্মত্যাগকে অস্বীকার করে তাদের ফ্যাসিস্ট শাসনকে এখনো জায়েজ করার চেষ্টা করছে। এই নির্লজ্জতা রীতিমত মানুষের সব কল্পনার সীমাকে ছাড়িয়ে যাচ্ছে।” 

জোনায়েদ সাকি বলেন, “জনগণ চায় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা, অধিকার এবং মর্যাদার নিশ্চিয়তা। আমরা যে কোনো ধরনের অন্যায়কে সমর্থন করি না। আমরা মনে করি, ফ্যাসীবাদীদের সব ষড়যন্ত্র আমাদের রুখে দিতে হবে। ষড়যন্ত্র রুখতে গেলে অবশ্যই আমাদের আইন অনুযায়ী, গণতান্ত্রিক অধিকার বজায় রাখতে হবে। তা না হলে আমরা নিজেরাই ফ্যাসিবাদের খপ্পরে পড়ব। আমরা মনে করি, অপশক্তি আমাদের দেশের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রাকে রুখতে পারবে না। 

এসময় উপস্থিত ছিলেন গণসংহতি আন্দোলনের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতাকর্মীরা।