রাজশাহীর পবায় ‘ভণ্ড পীর-ফকিরদের’ সমাজ ও শরীয়তবিরোধী কার্যক্রমের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ মিছিল করেছেন উলামায়ে কেরাম ও মুসল্লিরা।
শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) জুমার নামাজের পর পবা উপজেলার বায়া বাজারে এ কর্মসূচি পালিত হয়।
এর আগে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের রাজশাহী জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মাওলানা ইমরান উদ্দীনের নেতৃত্বে ওই এলাকায় একটি মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি বায়া বাজারের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে মানববন্ধনে মিলিত হয়।
সেখানে মাওলানা ইমরান উদ্দীন বলেছেন, “পবার চন্দ্রপুকুর গ্রামে হক বাবা গাউছুল আজম মাইজভান্ডারী গাউছিয়া পাক দরবার শরীফের আড়ালে গাঁজার আড্ডা বসানো হতো। এ খবর পেয়ে দেড় শতাধিক মানুষ সেখানে গিয়ে তা ভেঙে দেয়। আমরা মসজিদ বা মাজারের বিরুদ্ধে নই; তবে যেখানে অপকর্ম হবে, সেখানেই প্রতিবাদ জানানো হবে।”
তিনি আরো বলেন, “দেশের বিভিন্ন স্থানে ভণ্ড পীরদের বিরুদ্ধে আন্দোলন হলে নিরপরাধ আলেম-ওলামাদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। আমরা সরকারের কাছে আহ্বান জানাই, যেন আলেম-ওলামাদের হয়রানি না করা হয়।”
মানববন্ধনে দারুল উলুম আন নাজমুস সাকিব মাদ্রাসার পরিচালক আবু জাফর বলেন, “আমরা স্পষ্ট করে জানাতে চাই, ইসলামে কোনো ভ্রান্ত মতবাদ বা কুসংস্কারের স্থান নেই। সমাজে নৈতিক অবক্ষয় ও মাদকাসক্তি বৃদ্ধির পেছনে এসব ভণ্ড আস্তানার বড় ভূমিকা রয়েছে। তারা গোপনে মাদক ও অসামাজিক কার্যকলাপের আসর বসায়, আবার প্রকাশ্যে ধর্মের দোহাই দেয়। মুসল্লিরা আজ মাঠে নেমেছে এ কারণেই।”
আবু জাফর বলেন, “পবা উপজেলাসহ দেশের সব অঞ্চলে ভণ্ড পীর-ফকিরদের কার্যক্রম বন্ধ করতে হবে। প্রশাসনকে এ ব্যাপারে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। আমরা চাই, সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হোক, যুবসমাজ ইসলামি আদর্শে গড়ে উঠুক।”
মানববন্ধনে আরো বক্তব্য দেন—বড়গাছী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য গোলাম মোস্তফা এবং মাদানী মাদ্রাসার প্রধান হজরত মাওলানা মোহাম্মদ আলী। প্রায় দেড় ঘণ্টাব্যাপী এই মানববন্ধন শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়।
এর আগে গত শুক্রবার জুমার নামাজের পর পবার বড়গাছি ইউনিয়নের চন্দ্রপুকুর গ্রামে হক বাবা গাউছুল আজম মাইজভান্ডারী গাউছিয়া পাক দরবার শরীফে হামলা চালায় তৌহিদী জনতা। সেদিন পুলিশের সামনেই এই খানকা শরীফ ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। এ নিয়ে অবশ্য আইনি প্রতিকার চাননি খানকার ‘পীর’ আজিজুর রহমান।