জাতিসংঘের কার্যকর ভূমিকা নিশ্চিত করতে নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্যদের ভেটো ব্যবহারে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম. সাখাওয়াত হোসেন।

জাতিসংঘ দিবস ২০২৫ উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘জাতিসংঘ দিবস: জাতিসংঘ সংস্কারের পর্যালোচনা ও মূল্যায়ন’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে তিনি এ মন্তব্য করেন।

সেমিনারটি যৌথভাবে আয়োজন করে সাউথ এশিয়ান ইনস্টিটিউট অব পলিসি অ্যান্ড গভর্ন্যান্স (এসআইপিজি), এইচ অ্যান্ড এইচ (হুসাইন অ্যান্ড হুসাইন) ফাউন্ডেশন এবং ইউনাইটেড নেশনস অ্যাসোসিয়েশন (ইউএএনএ)–লুটন শাখা (যুক্তরাজ্য)।

বিশ্বব্যবস্থায় বহুপাক্ষিক সহযোগিতা ও মানবিক মূল্যবোধের প্রতি অঙ্গীকার পুনর্গঠনের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে ড. এম. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, “জাতিসংঘের কাঠামোগত সংস্কারের সময় এখনই। জাতিসংঘের কার্যকর ভূমিকা নিশ্চিত করতে হলে নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্যদের ভেটো ব্যবহারে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা জরুরি।”

তিনি আরও বলেন, “বৈশ্বিক শান্তি রক্ষার ক্ষেত্রে দায়িত্বশীলতা কেবল শক্তিধর রাষ্ট্রগুলোর নয়, বরং সব সদস্য দেশের জন্যই সমানভাবে প্রযোজ্য। এ দায়িত্ব শক্তিধর রাষ্ট্রগুলোর পাশাপাশি সব সদস্য রাষ্ট্রেরই সমানভাবে থাকা উচিত। বাংলাদেশ শান্তিপ্রিয়, নিরপেক্ষ ও গঠনমূলক অবস্থান থেকে বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে বদ্ধপরিকর।”

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইউএএনএ–লুটন (যুক্তরাজ্য)এর সেক্রেটারি ড. ডেভিড চিজম্যান। তিনি জাতিসংঘের ভেটো প্রক্রিয়া পুনর্বিবেচনা এবং বৃহত্তর বৈশ্বিক সহযোগিতা জোরদারের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন।

সংস্থাটির সভাপতি ড. নাজিয়া খানম তরুণ প্রজন্মকে জাতিসংঘের মূল্যবোধে উদ্বুদ্ধ করার আহ্বান জানান এবং নিরাপত্তা পরিষদের সংস্কারের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।

এসআইপিজির সিনিয়র রিসার্চ ফেলো অ্যাম্বাসেডর মো. সুফিউর রহমান বলেন, “জাতিসংঘকে আরও কার্যকর করতে ধাপে ধাপে বাস্তবসম্মত সংস্কার প্রয়োজন।”

অনুষ্ঠানের সমাপনী পর্বে ইউএএনএ–লুটন (যুক্তরাজ্য) বাংলাদেশের সামাজিক উন্নয়ন ও টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি) অর্জনে অবদানের জন্য ডাকবক্স ফাউন্ডেশন, এইচ অ্যান্ড এইচ ফাউন্ডেশন, পাবলিক স্পিকিং ফাউন্ডেশন এবং প্রাণ–আরএফএল গ্রুপকে সম্মাননা প্রদান করে।

সেমিনারে কূটনীতিক, একাডেমিক, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি ও সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। তারা এ আয়োজনকে জাতিসংঘ সংস্কার ও বৈশ্বিক শাসনব্যবস্থার ভবিষ্যৎ নিয়ে সময়োপযোগী ও ফলপ্রসূ একটি আলোচনা প্ল্যাটফর্ম হিসেবে অভিহিত করেন।