জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় নির্মাণাধীন গ্রন্থাগার ভবনের ছাদ থেকে পড়ে মো. আরিফুল নামে একজন নির্মাণ শ্রমিক নিহত হয়েছেন। তার গ্রামের বাড়ি ঝিনাইদহ জেলার শৈলকূপা উপজেলায়।
শনিবার (২ আগস্ট) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কামরুল আহসান শ্রমিক মৃত্যুর এঘটনায় গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন।
এছাড়া মৃত্যুর প্রকৃত কারণ উদঘাটনের জন্য পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং কমিটিকে পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত সম্পন্ন করে সুপারিশসহ প্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
শোক বার্তায় উপাচার্য বলেন, “এই অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যু তার পরিবারের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি। তার পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি এবং তার আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি। জুলাই-আগস্টের প্রতিটি অনুষ্ঠানসূচিতে তার প্রতি সম্মান জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন এবং বিভিন্ন মসজিদে দোয়া ও অন্যান্য উপাসনালয়ে প্রার্থনার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।”
জানা গেছে, শুক্রবার (১ আগস্ট) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় নির্মাণাধীন কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির লেকচার থিয়েটার ভবনের চতুর্থ তলা থেকে পড়ে গুরুতর আহত হন তিনি।
আহত অবস্থায় প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রে নেওয়া হলে সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক আশঙ্কাজনক দেখে দ্রুত সাভারের এনাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করেন। সেখানে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরিফুলের মৃত্যু হয়।
এর আগে, এই ভবনের নির্মাণ কাজে নিষেধাজ্ঞা জারি করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কিন্তু এ নিষেধাজ্ঞা অমান্য করেই সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নির্মাণ কাজ পরিচালনা করছিল বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
মো. আরিফুলের মৃত্যুর প্রকৃত কারণ উদঘাটন এবং নির্মাণ কাজে প্রশাসনিক নিষেধাজ্ঞা থাকার পরও কেনো শ্রমিকরা নির্মাণাধীন ভবনে অবস্থান করছেন, তা অনুসন্ধানে জরুরি সভা আহ্বান করা হয়। সভায় পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. শফিকুল ইসলামকে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটিকে পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত সম্পন্ন করে সুপারিশসহ প্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নির্দেশনা অমান্য করে নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ প্রমাণ সাপেক্ষে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনা হবে। মৃত নির্মাণ শ্রমিকের পরিবারকে যথোপযুক্ত আর্থিক সাহায্য ও অন্যান্য সহযোগিতা করা হবে বলেও জানিয়েছে জাবি প্রশাসন।