রংপুরের তারাগঞ্জে চোর সন্দেহে শ্বশুর-জামাইকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় প্রকৃত অপরাধীদের গ্রেপ্তার এবং ভুক্তভোগী পরিবারের ক্ষতিপূরণ ও নিরাপত্তার দাবিতে মানববন্ধন করা হয়েছে।
শনিবার (১৬ আগস্ট) দুপুর ১২টার দিকে রংপুর প্রেসক্লাবের সামনে দলিত জনগোষ্ঠী অধিকার আন্দোলনের ব্যানারে ঘণ্টাব্যাপী আয়োজিত মানববন্ধনে এসব দাবি জানানো হয়।
এতে বক্তব্য দেন, দলিত জনগোষ্ঠী অধিকার আন্দোলনের রংপুর জেলা শাখার সভাপতি অ্যাডভোকেট মনিলাল দাস, সাধারণ সম্পাদক গোপাল চন্দ্র দাস, আইনজীবী পলাশ কান্তি নাগ প্রমুখ। মানববন্ধনে সংগঠনের অন্য সদস্যরা ছাড়াও নিহতদের স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন।
বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, সন্ত্রাসীদের হাত-পা ধরেও জীবন রক্ষা হয়নি শ্বশুর-জামাইয়ের। পুলিশ ও প্রশাসনের অবহেলার কারণেই এই মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। তাই দ্রুত বিচার নিশ্চিতের পাশাপাশি সারাদেশে মব ভায়োলেন্স দমন করতে সরকার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।
তারা বলেন, সারা দেশে যেভাবে মব ভায়োলেন্স সৃষ্টি করে একের পর এক তাণ্ডব, ধ্বংসযজ্ঞ ও হত্যাকান্ডের মত ঘটনা ঘটছে, এসব ঘটনায় সরকারের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর এখন পর্যন্ত কোনো তৎপরতা দেখা যায়নি। দেশের মানুষের নিরাপত্তা নিয়ে সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের সমালোচনা করেন বক্তারা।
অ্যাডভোকেট মনিলাল দাস বলেন, “প্রকাশ্যে চোর আখ্যা দিয়ে উগ্রবাদী সন্ত্রাসীরা দুইজন নিরপরাধ মানুষকে হত্যা করেছে। অথচ ঘটনাস্থলে উপস্থিত পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। উগ্রবাদীদের নিবৃত করতে কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ নেই। উপস্থিত থেকেও কেনো পুলিশ দায়িত্ব পালন করেনি, তার জবাব রাষ্ট্রকে দিতে হবে।”
তিনি আরো বলেন, “এই হত্যাকাণ্ডের মূল হোতাদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানাচ্ছি। একইসঙ্গে সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি নিহত পরিবারগুলোর ভরণপোষণের দায়িত্ব সরকারকে নিতে হবে।”
গত ৯ আগস্ট রাতে রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার বুড়িহাট এলাকায় চোর সন্দেহে শ্বশুর-জামাইকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে তারাগঞ্জ থানায় অজ্ঞাতনামা ৭০০ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়।
পুলিশ এখন পর্যন্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে। এছাড়া দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে আট পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।