রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ থামাতে শান্তিচুক্তির আগে যুদ্ধবিরতি জরুরি, অন্যথায় সংঘাত থামবে না বলে সতর্ক করেছেন মার্কিন কূটনীতিক ডোনাল্ড হেফলিন। টাফটস বিশ্ববিদ্যালয়ের ফ্লেচার স্কুলে অধ্যাপনায় নিযুক্ত এই কূটনীতিক আলাস্কা বৈঠক ও ওয়াশিংটনের নতুন আলোচনাকে ঘিরে তিনি দ্য কনভারসেশন ইউএস-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ মন্তব্য করেন।
হেফলিন বলেন, এটি আগে থেকেই ব্যর্থতার দিকে যাচ্ছিল। রাশিয়া কিংবা ইউক্রেন কেউই আলোচনায় বসতে প্রস্তুত ছিল না। সঠিকভাবে কূটনৈতিক ও দফতর পর্যায়ে প্রস্তুতি নেওয়া হয়নি। যুদ্ধবিরতির আশা করা হয়েছিল, কিন্তু সেটি ঘটেনি।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন চাইছেন সরাসরি স্থায়ী শান্তিচুক্তিতে যেতে। তবে ইউক্রেন ও দেশটির ইউরোপীয় মিত্ররা প্রত্যাখ্যান করেছে। কারণ, শান্তিচুক্তি মানে দখলকৃত ভূখণ্ড ভাগ করে নেওয়া। পুতিনও স্পষ্ট করেছেন ২০১৪ ও ২০২২ সালে দখল করা অঞ্চল ফেরত দেবেন না।
হেফলিনের মতে, এটি ইউক্রেনের জন্য একেবারেই অগ্রহণযোগ্য শর্ত। তিনি বলেন, যদি রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা চালিয়ে ভূখণ্ড দখল করে সেটি রাখতে পারে। তবে অন্য দেশও একইভাবে আগ্রাসনে উৎসাহিত হবে। এতে ইউরোপের শতবর্ষের সীমানা মানচিত্র বদলে যাবে, যা মারাত্মক অস্থিরতা সৃষ্টি করবে।
হেফলিন আরও মনে করিয়ে দিয়েছেন যে, ১৯৯৪ সালে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ ইউক্রেনকে নিরাপত্তা নিশ্চয়তা দিয়েছিল পারমাণবিক অস্ত্র ছেড়ে দেওয়ার শর্তে। এখন যদি পশ্চিমা বিশ্ব কিয়েভকে হতাশ করে, তবে তা শুধু ইউক্রেন নয়, বরং তাইওয়ানের মতো অংশীদারদের কাছেও নেতিবাচক বার্তা পাঠাবে।
মার্কিন কূটনীতিকের আশা, সোমবারের বৈঠকে ট্রাম্প ইউরোপীয় নেতাদের দাবির সঙ্গে একমত হয়ে অন্তত একটি যুদ্ধবিরতির পথে এগোবেন। হেফলিন বলেন, ট্রাম্প কখনও যুদ্ধপন্থি নন। তিনি চান যুদ্ধ থামুক। তবে যদি এই বৈঠক থেকে অন্তত ৬০–৯০ দিনের যুদ্ধবিরতির ঘোষণা না আসে, তবে কোনও বাস্তব অগ্রগতি ঘটবে না।
সাক্ষাৎকারে তিনি রাশিয়ার হাতে আটকে পড়া হাজারো ইউক্রেনীয় শিশুর প্রসঙ্গও তোলেন। তার মতে, তাদের ফেরত দেওয়া হলে আলোচনায় ইতিবাচক বার্তা যাবে। তবে সেটি আদৌ হবে কি না, তা নিয়ে তিনি সংশয় প্রকাশ করেছেন।
হেফলিনের মতে, যুদ্ধবিরতি হলো প্রথম ধাপ। একে এড়িয়ে সরাসরি শান্তিচুক্তিতে গেলে সংঘাত শেষ হবে না, বরং আরও জটিল হবে।