ক্লাস থ্রিতে পড়েন তখন। একদিন তাঁকে ডেকে শিক্ষক বললেন, ‘চাঁদ নিয়ে একটা কবিতা পড়তে হবে।’ ছোট্ট ছেলেটি উঠে দাঁড়িয়ে কবিতাটা পড়তে শুরু করল। পড়তে পড়তে যেন কবিতার ভেতরেই ঢুকে গেল সে। যখন পড়া শেষ হলো, তখন মনে হলো, এক অদ্ভুত তৃপ্তি ছড়িয়ে আছে তাঁর ভেতরে। তখনই মনে মনে ঠিক করে নিলেন—এই অনুভূতি, এই আনন্দ, এই মোহময়তাকে সারা জীবন ধরে রাখতে চান। সেই ছোট্ট ছেলেটিই আজকের বহুমুখী অভিনেতা মোশাররফ করিম।
আজ ২২ আগস্ট তাঁর জন্মদিন। ছোটবেলা থেকে স্বপ্ন ছিল অভিনয়ের, কিন্তু পথটা সহজ ছিল না। ১৯৮৯ সালে যখন শুনলেন তারিক আনাম খান নতুন একটি দল গড়ছেন, তখনো ফলাফল প্রকাশ হয়নি তাঁর উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার। অথচ অডিশনে অংশ নেওয়ার জন্য শর্ত ছিল এই পরীক্ষায় পাস। যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও সাহস করে লিখলেন ফরমে—‘পরীক্ষা দিয়েছি, ফলাফল হয়নি।’ সেই সাহসই তাঁকে পৌঁছে দিল নাট্যকেন্দ্র নামের মঞ্চ দলে। ১ হাজার ৪০০ আবেদনকারীর ভিড় থেকে বাছাই করা হয়েছিল মাত্র ২৫ জনকে, তাঁদের একজন হয়ে গেলেন মোশাররফ করিম। এখান থেকেই শুরু।
মঞ্চে টানা ১৬ বছর অভিনয় করে তৈরি হলো তাঁর ভিত। একের পর এক চরিত্রে নিজেকে ঘষে-পিটে নিলেন। তারপর ২০০৫ সালে ছোট পর্দায় নিয়মিত হলেন। তখনো নাটকের টাইটেলে যেত তাঁর নাম—‘কে এম মোশাররফ হোসেন’। বছর শেষে নিজের নামের সঙ্গে বাবার নাম থেকে নেওয়া ‘করিম’ যুক্ত করলেন। হয়ে গেলেন ‘মোশাররফ করিম’। যেন এক নতুন জন্ম।