০৮:১১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৯ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

চবিতে সংঘর্ষের ৬ ঘণ্টা পর আসে যৌথবাহিনী 

  • Voice24 Admin
  • সময়ঃ ১২:০০:৪৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • ৫৪৫ Time View

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শিক্ষার্থীদের সাথে রবিবার স্থানীয়দের পুনরায় সংঘর্ষ শুরু হওয়ার ৬ ঘণ্টা পর ঘটনাস্থলে এসেছিল যৌথবাহিনী। এতে পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করে। এ দীর্ঘ সময়ে স্থানীয় কিছু বাসিন্দা রামদা, চাপাতিসহ বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র দিয়ে শিক্ষার্থীদের উপর মুহুর্মুহু হামলা চালিয়েছে। এ ঘটনায় এখনো পর্যন্ত আহত হয়েছেন প্রায় পাঁচশত শিক্ষার্থী। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এই ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

রবিবার (৩১ আগস্ট) দুপুর সাড়ে ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ নং গেট সংলগ্ন এলাকায় ফের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘর্ষ শুরু হয়। পরিস্থিতি খারাপ হওয়ার সাথে সাথে পুলিশ ও সেনাবাহিনীকে আসার জন্য ফোন করেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, প্রক্টরিয়াল বডি এবং শিক্ষার্থীরা। তবে বারবার জানানোর পরেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দেখা মেলেনি বলে অভিযোগ করেছেন তারা। প্রায় ছয় ঘণ্টা পর বিকাল ৪টা ২০ মিনিটে যৌথবাহিনী ঘটনাস্থলে আসে। এরপর পরিস্থিতি ধীরেধীরে নিয়ন্ত্রণে আসে।

ক্ষোভ প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মো. সাইদুল ইসলাম শামীম বলেন, “এই নৃশংস হামলার ৬ ঘন্টা পেরিয়ে গেলেও আর্মি বা প্রশাসনের কেউ আসে নাই; যেখানে তাদের আসতে ১৫ মিনিট সময় লাগতো। প্রশাসনের এই নীরব ভূমিকার জন্যই আজ আমাদের এতোগুলা ভাই আহত হয়েছে।”

আরবি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শহিদুল ইসলাম বলেন, “গতকাল রাতে সেনাবাহিনী আসছে হামলার অনেক পরে। তারপর একটা চক্কর দিয়ে শেষ। এই পরিস্থিতিতে ছাত্রদের ফেলে দিয়ে আবার চলে যায়। তাদের উচিত ছিল আজকে পুরো দিন এখানে অবস্থান করা এবং সন্ত্রাসীদের পর্যবেক্ষণ করা। কিন্তু তারা চলে গেল।”

তিনি বলেন, “এরপর হামলা আবার হলো সকাল ১০ টার দিকে। আর সেনাবাহিনী আসলো ৪টার পরে,  তাও তারা একটা হামলাকারীকে ধরতে পারলো না।”

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর নুরুল হামিদ কানন বলেন, “ঘটনা শুরু হওয়ার পর থেকেই আমরা ধাপে ধাপে পুলিশ-আর্মি প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ করি। বিশ্ববিদ্যালয়ে সর্বোচ্চ পর্যায় থেকেও যোগাযোগ করা হয়। প্রতিবারই তারা আমাদের বলেছে, তারা অন দ্য ওয়ে। কিন্তু তাদেরআসতে আসতে প্রায় ছয় ঘণ্টা লেগে গেছে। এতে পরিস্থিতি ভয়াবহ ও ভীষণ উত্তপ্ত হয়ে উঠে।”

তিনি বলেন, “এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ বোর্ড থেকে প্রধান উপদেষ্টা, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার দপ্তরে এ বিষয়ে যোগাযোগ করে সাহায্য চাওয়া হয়েছিল। শুধু আজ আমাদের তিন শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। কয়েকজনের অবস্থা খুব আশঙ্কাজনক।”

উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন বলেন, “আমরা জিওসি স্যার, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ও প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরে বারবার কথা বলেছি। এছাড়া স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাথেও দফায় দফায় কথা হয়েছে। কিন্তু আমাদের পাশে কেউ ছিল না।”

তিনি বলেন, “আজ স্থানীয় সন্ত্রাসীরা এবং ছাত্রলীগের ক্যাডাররা আমাদের শিক্ষার্থী-শিক্ষকদের উপর ন্যাক্কারজনক হামলা চালিয়েছে। এতে আমাদের প্রায় ৪০০-৫০০ জন আহত হয়েছে। চবির ইতিহাসে এমন ভয়াবহ দিন কখনো দেখা যায়নি। এ ভয়াবহ হামলার বিচার হতেই হবে।”

এদিকে শনিবার রাত ১২ থেকে শুরু হওয়া সংঘর্ষ থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় পাচঁশত শিক্ষার্থী-শিক্ষক আহত হয়েছেন বলে রাইজিংবিডি ডটকমকে অবহিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (অ্যাকাডেমিক) অধ্যাপক ড. মো. শামীম উদ্দিন খান। 

ট্যাগঃ

চবিতে সংঘর্ষের ৬ ঘণ্টা পর আসে যৌথবাহিনী 

সময়ঃ ১২:০০:৪৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শিক্ষার্থীদের সাথে রবিবার স্থানীয়দের পুনরায় সংঘর্ষ শুরু হওয়ার ৬ ঘণ্টা পর ঘটনাস্থলে এসেছিল যৌথবাহিনী। এতে পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করে। এ দীর্ঘ সময়ে স্থানীয় কিছু বাসিন্দা রামদা, চাপাতিসহ বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র দিয়ে শিক্ষার্থীদের উপর মুহুর্মুহু হামলা চালিয়েছে। এ ঘটনায় এখনো পর্যন্ত আহত হয়েছেন প্রায় পাঁচশত শিক্ষার্থী। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এই ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

রবিবার (৩১ আগস্ট) দুপুর সাড়ে ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ নং গেট সংলগ্ন এলাকায় ফের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘর্ষ শুরু হয়। পরিস্থিতি খারাপ হওয়ার সাথে সাথে পুলিশ ও সেনাবাহিনীকে আসার জন্য ফোন করেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, প্রক্টরিয়াল বডি এবং শিক্ষার্থীরা। তবে বারবার জানানোর পরেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দেখা মেলেনি বলে অভিযোগ করেছেন তারা। প্রায় ছয় ঘণ্টা পর বিকাল ৪টা ২০ মিনিটে যৌথবাহিনী ঘটনাস্থলে আসে। এরপর পরিস্থিতি ধীরেধীরে নিয়ন্ত্রণে আসে।

ক্ষোভ প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মো. সাইদুল ইসলাম শামীম বলেন, “এই নৃশংস হামলার ৬ ঘন্টা পেরিয়ে গেলেও আর্মি বা প্রশাসনের কেউ আসে নাই; যেখানে তাদের আসতে ১৫ মিনিট সময় লাগতো। প্রশাসনের এই নীরব ভূমিকার জন্যই আজ আমাদের এতোগুলা ভাই আহত হয়েছে।”

আরবি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শহিদুল ইসলাম বলেন, “গতকাল রাতে সেনাবাহিনী আসছে হামলার অনেক পরে। তারপর একটা চক্কর দিয়ে শেষ। এই পরিস্থিতিতে ছাত্রদের ফেলে দিয়ে আবার চলে যায়। তাদের উচিত ছিল আজকে পুরো দিন এখানে অবস্থান করা এবং সন্ত্রাসীদের পর্যবেক্ষণ করা। কিন্তু তারা চলে গেল।”

তিনি বলেন, “এরপর হামলা আবার হলো সকাল ১০ টার দিকে। আর সেনাবাহিনী আসলো ৪টার পরে,  তাও তারা একটা হামলাকারীকে ধরতে পারলো না।”

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর নুরুল হামিদ কানন বলেন, “ঘটনা শুরু হওয়ার পর থেকেই আমরা ধাপে ধাপে পুলিশ-আর্মি প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ করি। বিশ্ববিদ্যালয়ে সর্বোচ্চ পর্যায় থেকেও যোগাযোগ করা হয়। প্রতিবারই তারা আমাদের বলেছে, তারা অন দ্য ওয়ে। কিন্তু তাদেরআসতে আসতে প্রায় ছয় ঘণ্টা লেগে গেছে। এতে পরিস্থিতি ভয়াবহ ও ভীষণ উত্তপ্ত হয়ে উঠে।”

তিনি বলেন, “এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ বোর্ড থেকে প্রধান উপদেষ্টা, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার দপ্তরে এ বিষয়ে যোগাযোগ করে সাহায্য চাওয়া হয়েছিল। শুধু আজ আমাদের তিন শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। কয়েকজনের অবস্থা খুব আশঙ্কাজনক।”

উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন বলেন, “আমরা জিওসি স্যার, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ও প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরে বারবার কথা বলেছি। এছাড়া স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাথেও দফায় দফায় কথা হয়েছে। কিন্তু আমাদের পাশে কেউ ছিল না।”

তিনি বলেন, “আজ স্থানীয় সন্ত্রাসীরা এবং ছাত্রলীগের ক্যাডাররা আমাদের শিক্ষার্থী-শিক্ষকদের উপর ন্যাক্কারজনক হামলা চালিয়েছে। এতে আমাদের প্রায় ৪০০-৫০০ জন আহত হয়েছে। চবির ইতিহাসে এমন ভয়াবহ দিন কখনো দেখা যায়নি। এ ভয়াবহ হামলার বিচার হতেই হবে।”

এদিকে শনিবার রাত ১২ থেকে শুরু হওয়া সংঘর্ষ থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় পাচঁশত শিক্ষার্থী-শিক্ষক আহত হয়েছেন বলে রাইজিংবিডি ডটকমকে অবহিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (অ্যাকাডেমিক) অধ্যাপক ড. মো. শামীম উদ্দিন খান।