এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) দায় পরিশোধের পর বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩০ দশমিক ৩১ বিলিয়ন ডলারে নেমেছে। একই সময়ে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব পদ্ধতি বিপিএম ৬ অনুসারে রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ২৫ দশমিক ৪০ বিলিয়ন ডলারে।
রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) এ তথ্য জানিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্রের দপ্তর।
এর আগে বৃহস্পতিবার গ্রস রিজার্ভ ছিল ৩১ দশমিক ৪৩ বিলিয়ন ডলার এবং বিপিএম ৬ অনুযায়ী ছিল ২৬ দশমিক ৪৫ বিলিয়ন ডলার। এরপর আকুর জুলাই-আগস্ট দুই মাসের আমদানি বিল বাবদ বিল পরিশোধ করা হয়।
গত জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নকে (আকু) ২ দশমিক শূন্য ২ বিলিয়ন ডলার পরিশোধের পর রিজার্ভ কমে দাঁড়িয়েছিল গ্রস হিসাবে ২৯ দশমিক ৫৩ বিলিয়ন এবং বিপিএম ৬ অনুযায়ী ২৪ দশমিক ৫৬ বিলিয়ন ডলারে।
রেমিট্যান্স প্রবাহে উল্লম্ফন, রপ্তানি আয়ে ইতিবাচক প্রবণতা এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর ঋণ সহায়তার কারণে জুন শেষে গ্রস রিজার্ভ বেড়ে দাঁড়ায় ৩১ দশমিক ৭২ বিলিয়ন ডলারে। গত ২৮ মাসের মধ্যে যা ছিল সর্বোচ্চ। সে সময় বিপিএম ৬ অনুযায়ী এ সময় রিজার্ভ বেড়ে দাঁড়ায় ২৬ দশমিক ৬৯ বিলিয়ন ডলার।
২০২১ সালের আগস্টে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রিজার্ভ ৪৮ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছায়। করোনা মহামারির কারণে প্রবাসীরা বেশি বেশি প্রবাসী আয় পাঠানোর পাশাপাশি অনেকে দেশে ফিরে আসেন। একই সময়ে আমদানি কমে যায়। যে কারণে রিজার্ভ বাড়ে। পরবর্তীতে ধারাবাহিক পতনে ২০২৪ সালের মাঝামাঝি সময়ে রিজার্ভ নেমে যায় ২০ বিলিয়ন ডলারে।
বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর অর্থপাচারে কঠোর নিয়ন্ত্রণ, হুন্ডি প্রবাহ কমে যাওয়া এবং বৈধ পথে রেমিট্যান্স বাড়ায় পরিস্থিতি ঘুরে দাঁড়িয়েছে। এ সময়ে আইএমএফ, এডিবি, জাইকাসহ বিভিন্ন সংস্থা থেকে বৈদেশিক ঋণও ছাড় হয়। এসব কারণে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধি পায়।
এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়ন (আকু), একটি আঞ্চলিক বাণিজ্যের লেনদেন নিষ্পত্তি ব্যবস্থা। যেখানে সদস্য দেশগুলোর কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো একে অপরের মধ্যে বাণিজ্যের লেনদেন নিষ্পত্তি করে। এই ব্যবস্থার মাধ্যমে সদস্য দেশগুলো দুই মাস পরপর তাদের আমদানি-রপ্তানির হিসাব সমন্বয় করে। আকুর সদস্য ভুক্ত দেশগুলোতে বাংলাদেশের রপ্তানির চেয়ে আমদানি বেশি হওয়ার কারণে প্রতি দুই মাস অন্তর দেড় থেকে দুই বিলিয়ন ডলার পরিশোধ করতে হয়।
আকুর সদস্য দেশগুলো হলো, বাংলাদেশ, ভুটান, ইরান, ভারত, মালদ্বীপ, নেপাল, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা এবং মিয়ানমার। আকুর প্রধান কার্যালয় ইরানের রাজধানীর তেহরানে।
জেডএ/আরআইএস