পাবনার চাটমোহর উপজেলায় ট্রান্সফরমার চুরির পর পাবনা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর প্রধান অফিস ঘেরাও করে বিক্ষুব্ধ কৃষকরা।
সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) রাত ৯টার দিকে কার্যালয় ঘেরাও করা হয়। পরে চাটমোহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) হস্তক্ষেপে এবং দ্রুত ট্রান্সফরমার লাগিয়ে দেওয়ার আশ্বাসে বিক্ষুব্ধ কৃষকেরা শান্ত হয়।
উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের ধরইল মল্লিকপাট এলাকায় কুড়িল বিলের একটি সেচ পাম্পে আসা বৈদ্যুতিক পোল থেকে তিনটি ট্রান্সফরমার চুরির উদ্দেশ্যে চোরেরা নিচে নামায়। এর মধ্যে একটি ট্রান্সফরমারের তামার তার চুরি করে নিয়ে যায় তারা। এতে কৃষি জমিতে পানি দেওয়া বন্ধ হয়ে গেলে রাতেই বিদ্যুৎ অফিস ঘেরাও করেন বিক্ষুব্ধ কৃষকেরা।
ধরইল মল্লিকপাট এলাকায় কুড়িলবিলে কৃষকরা প্রায় শতাধিক বিঘা জমিতে ইরি ও আমন ধানের আবাদ করছেন। ওই এলাকার কাজেম আলী সেচ পাম্পের মাধ্যমে পানি সরবরাহ করে থাকেন। সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) রাত ৮টার দিকে হঠাৎ করে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। প্রায় আড়াই মিনিট পর আবার বিদ্যুৎ আসে। এরমধ্যে কৃষকরা চোরের উপস্থিতি টের পেলে ধাওয়া দেয়।
এলাকার শতাধিক কৃষক ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখেন বৈদ্যুতিক পোল থেকে তিনটি ট্রান্সফরমার নামানো। এরমধ্যে একটি ট্রান্সফরমার থেকে পুরো তামার তার খুলে নিয়ে গেছে। এতে কৃষি জমিতে পানি পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিলে বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে স্থানীয় কৃষকেরা। পরে তারা একজোট হয়ে রাত ৯টার দিকে পাবনা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর প্রধান অফিসের সামনে এসে এই চুরির সঙ্গে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির লোকজন জড়িত থাকার অভিযোগ তুলে বিভিন্ন স্লেঅগান দেন এবং দ্রুত সময়ের মধ্যে ট্রান্সফরমার লাগানোর দাবি জানান।
পরে ঘটনাস্থলে চাটমোহর থানার ওসি মনজুরুল আলমসহ অন্য পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত হয়ে উত্তেজিত কৃষকদের শান্ত করেন। মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ ট্রান্সফরমার লাগিয়ে দেবে বলে আশ্বাস দেয়। এরপর কৃষকেরা শান্ত হয়।
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিকে দোষারোপ করে সেচ পাম্প মালিক কাজেম আলীসহ অন্য কৃষকরা বলেন, ‘‘কোনো ঝড়-বৃষ্টি নেই। হঠাৎ করে কেনই বা বিদ্যুৎ গেল? আবার পোল থেকে ট্রান্সফরমার নামানোর কিছুক্ষণের মধ্যে বিদ্যুৎ চলে আসল? এই চোর চক্রের সঙ্গে পল্লী বিদ্যুতের কোনো কর্মচারী জড়িত আছে। তাছাড়া এভাবে এবং এত অল্প সময়ের মধ্যে ট্রান্সফরমার চুরি করা সম্ভব না।’’
পাবনা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর সহকারী জেনারেল ম্যানেজার আব্দুল খালেক বলেন, ‘‘আমরা কীভাবে জড়িত হব? আমরা চোর খুঁজছি। মানুষের সন্দেহ থাকতেই পারে। তবে গ্রাহকদের যেন কোনো ক্ষতি না হয়, সেই বিবেচনায় নীতিমালার মধ্যে ট্রান্সফরমার লাগানো হয়েছে।’’
এ ব্যাপারে চাটমোহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনজুরুল আলম জানান, রাতে বিক্ষুব্ধ কৃষকদের আশ্বস্ত করলে তারা চলে যায়। এখন পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।