আর্কটিক অঞ্চলের বরফ গলার ফলে ইউরেশিয়ায় ঘনঘন শৈত্যপ্রবাহের যে প্রভাব দেখা যায়, তাতে সমুদ্র-বায়ুমণ্ডলীয় সংযোগের বড় ভূমিকা রয়েছে বলে নতুন গবেষণায় উঠে এসেছে। গবেষণাটি চালিয়েছে চাইনিজ অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সেস-এর অধীনে নর্থওয়েস্ট ইনস্টিটিউট অব ইকো-এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড রিসোর্সেস।
ব্রিটেনের এক্সেটার বিশ্ববিদ্যালয় ও চীনের লানচৌ বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ গবেষণার ফল প্রকাশিত হয়েছে এনপিজে ক্লাইমেট অ্যান্ড অ্যাটমোসফেরিক সায়েন্স জার্নালে।
গত এক দশকে ইউরেশিয়া মহাদেশে ঘনঘন তীব্র শৈত্যপ্রবাহ আঘাত হানছে, যা মানুষের জীবন, সম্পদ ও সামাজিক-অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
গবেষকরা দুটি প্রধান পরীক্ষা চালান—একটি কেবল বায়ুমণ্ডলীয় প্রক্রিয়াকে বিবেচনায় রেখে এবং অপরটি সমুদ্র-বায়ুমণ্ডলীয় সংযোগসহ পূর্ণাঙ্গ মডেল ব্যবহার করে। ফলাফলে দেখা গেছে, পূর্ণাঙ্গ পরীক্ষায় পর্যবেক্ষণ করা শৈত্যপ্রবাহ সংকেতগুলো যথাযথভাবে প্রতিফলিত হয়েছে, অথচ বায়ুমণ্ডলীয় পরীক্ষায় প্রতিক্রিয়া ছিল অত্যন্ত দুর্বল।
গবেষকরা দেখেছেন, সমুদ্রের বরফ গলে যাওয়ার ফলে উত্তর আটলান্টিক ও উত্তর প্রশান্ত মহাসাগরের সমুদ্রপৃষ্ঠে অস্বাভাবিক উষ্ণতা দেখা দেয়। সমুদ্র-বায়ুমণ্ডলীয় সংযোগ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এই পরিবর্তন মেরু অঞ্চলে উত্তরমুখী তাপ পরিবহনকে ত্বরান্বিত করে, ফলে আর্কটিক অঞ্চলে গভীর উষ্ণায়ন ঘটে এবং শৈত্যপ্রবাহ সৃষ্টির অনুকূল পরিবেশ তৈরি হয়।
গবেষণাটি শৈত্যপ্রবাহের দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাস দেওয়ার সক্ষমতা উন্নত করবে এবং দুর্যোগ প্রতিরোধে একটি বৈজ্ঞানিক ভিত্তি তৈরি করে দেবে। একই সঙ্গে দ্রুত পরিবর্তনশীল আর্কটিক অঞ্চল ও তার জলবায়ু প্রতিক্রিয়া সম্পর্কেও নতুন দৃষ্টিভঙ্গি দেবে।