০৯:৫৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৭ নভেম্বর ২০২৫, ২৩ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ক্যালকুলেটরে সম্পর্কের হিসেব করবেন না

  • Voice24 Admin
  • সময়ঃ ১২:০২:৩৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫
  • ৫৫৯ Time View

প্রশ্ন

আমি একটি ব্রোকেন পরিবারের মেয়ে সন্তান। আমার বয়স ৩২। আমি বড় হয়েছি আমার মায়ের কাছে। বাবার সঙ্গে আমাদের কোনও সম্পর্কই ছিল না কোনোদিন। তার প্রতি ছোটবেলা থেকে অশ্রদ্ধা জন্ম নেওয়ায় আমি কোনোদিন কোনও ছেলেকে বিশ্বাস করতে পারিনি। আমার মায়ের মতো এত মানবিক, দায়িত্বশীল মানুষকে যখন অসম্মানিত করে ছেড়ে যাওয়া যায় তখন আসলে সবই সম্ভব। এভাবে ভাবতে গিয়ে একসময় লক্ষ্য করলাম, আমি ছেলেদের ভয় পাই, আমি কোনও ভরসার জায়গা খুঁজে পাই না। ইদানীং আমার একটি সম্পর্ক হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। আমরা পরস্পরকে পছন্দ করছি, কিন্তু কোনও একটা সম্পর্কে জড়ানোর সাহস আমার নেই। আমি কি এ থেকে বের হতে পারবো?

উত্তর

প্রথমেই সবচেয়ে জরুরি কথাটা বলি। হ্যাঁ, আপনি অবশ্যই এই অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে পারবেন। আপনার মনে যে প্রশ্নটি জেগেছে, ‘আমি কি পারব?’—এই প্রশ্নটিই আপনার যাত্রার প্রথম এবং সবচেয়ে সাহসী পদক্ষেপ। আপনি সমস্যাটা বুঝতে পেরেছেন এবং এর থেকে উত্তরণ চাইছেন, এটাই অর্ধেক সমাধান।

কেন এমনটা হচ্ছে, তা বোঝা জরুরি

ছোটবেলায় আমরা অজান্তেই আমাদের জীবনে প্রথম দেখা পুরুষ, অর্থাৎ বাবার চরিত্রকে সব পুরুষের ওপর আরোপ করে ফেলি। আপনার বাবার দায়িত্বহীনতা এবং আপনার মায়ের প্রতি তার অসম্মান আপনার মনে একটি গভীর ক্ষত তৈরি করেছে। আপনার অবচেতন মন আপনাকে বারবার বলছে, ‘সব পুরুষই এমন। কেউই বিশ্বাসযোগ্য নয়।’ এটা আপনার দোষ নয়, এটা আপনার পরিস্থিতির তৈরি করা একটা আত্মরক্ষার কৌশল। আপনার মন আপনাকে সম্ভাব্য কষ্ট থেকে বাঁচানোর জন্য এই দেয়াল তৈরি করেছে।

আদর্শের সংঘাত অন্যতম কারণ

আপনি আপনার মাকে একজন মানবিক এবং দায়িত্বশীল মানুষ হিসেবে দেখেছেন। যখন এমন একজন আদর্শ মানুষ কষ্ট পান, তখন মনে এই বিশ্বাস জন্মায় যে পৃথিবীতে ভালো বা দায়িত্বশীল হওয়ার কোনও পুরস্কার নেই, বরং কষ্টই সার হয়। এই ভাবনাটা ভরসা এবং আস্থার ধারণাকে ভেতর থেকে নাড়িয়ে দেয়।

ভাবুন, কীভাবে এই দেয়াল ভাঙবেন

এখন মূল প্রশ্ন হলো, এই ভয় এবং অবিশ্বাসের চক্র থেকে কীভাবে বের হবেন। এটা একদিনে হবে না, এটি একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া।

আপনার অনুভূতিকে স্বীকৃতি দিন

প্রথমেই মেনে নিন যে আপনার ভয় পাওয়াটা স্বাভাবিক। নিজেকে এর জন্য দোষারোপ করবেন না। বলবেন না, ‘আমারই হয়তো কোনও সমস্যা।’ বরং নিজেকে বলুন, ‘আমার সাথে যা হয়েছে, তারপর ভয় পাওয়াটাই স্বাভাবিক। এখন আমি এই ভয়কে জয় করতে শিখব।’

অতীতকে বিচ্ছিন্ন করেন

আপনাকে সচেতনভাবে আপনার বাবাকে একজন ‘ব্যক্তি’ হিসেবে দেখতে হবে, ‘সমস্ত পুরুষজাতির প্রতিনিধি’ হিসেবে নয়। পৃথিবীতে কোটি কোটি পুরুষ আছে এবং তাদের প্রত্যেকে আলাদা। আপনার বাবার ভুলের জন্য পৃথিবীর সব পুরুষকে দায়ী করা বা তাদের থেকে একই আচরণ প্রত্যাশা করা আপনার বর্তমান এবং ভবিষ্যতের জন্য সবচেয়ে বড় বাধা।

নতুন সম্পর্ককে একটি সুযোগ দিন

আপনার জীবনে যে নতুন মানুষটির আগমন ঘটেছে, তিনি আপনার জন্য একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা হতে পারেন। কিন্তু তাড়াহুড়ো করার কোনও প্রয়োজন নেই। মানুষটিকে তার নিজের যোগ্যতা এবং আচরণের ভিত্তিতে দেখুন। আপনার বাবার সঙ্গে তার তুলনা করবেন না। দেখুন তিনি কীভাবে কথা বলেন, অন্যদের সঙ্গে কেমন আচরণ করেন, প্রতিশ্রুতি কতটা রক্ষা করেন, আপনার প্রতি তিনি কতটা শ্রদ্ধাশীল। তাকে চেনাজানার জন্য নিজেকে পর্যাপ্ত সময় দিন।

বন্ধুত্ব দিয়ে শুরু করুন

সম্পর্কের শুরুতেই ‘প্রেম’ বা ‘COMMITMENT’-এর মতো বড় শব্দগুলো নিয়ে ভেবে নিজেকে চাপে ফেলবেন না। সম্পর্কটাকে একটি সুন্দর বন্ধুত্ব হিসেবে শুরু করুন। বন্ধুত্বে আস্থা তৈরি করা সহজ হয়। যখন আপনি তাকে বন্ধু হিসেবে বিশ্বাস করতে শুরু করবেন, তখন প্রেমিক হিসেবে আস্থা রাখাও সহজতর হবে। সম্পর্কের গতি নির্ধারণ করার সম্পূর্ণ অধিকার আপনার। যদি আপনার মনে হয় সবকিছু খুব দ্রুত এগোচ্ছে, তাকে জানান। একজন সংবেদনশীল এবং সঠিক মানুষ আপনার এই অবস্থাকে অবশ্যই সম্মান জানাবেন।

খোলামেলা কিন্তু সঠিক সময়ে আলোচনা

যখন আপনাদের মধ্যে কিছুটা স্বস্তি এবং আস্থার সম্পর্ক তৈরি হবে, তখন আপনি আপনার ভয় এবং অতীতের কথা তাকে জানাতে পারেন। অভিযোগের সুরে নয়, তাকে বলার সময় এটা অভিযোগের মতো শোনানো উচিত নয় যে, ‘আমি পুরুষদের বিশ্বাস করি না’। বরং নিজের দুর্বলতা এবং ভয় প্রকাশ করার মতো করে বলুন। যেমন: ‘আমার পারিবারিক অভিজ্ঞতার কারণে নতুন কোনও সম্পর্কে আস্থা রাখতে আমার খুব ভয় হয় এবং একটু বেশি সময় লাগে। আমি এই ভয়টা কাটিয়ে উঠতে চাই এবং আশা করি তুমি আমাকে এই সময়টা দেবে।’

এরপর তার প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করুন। আপনার এই সংবেদনশীল কথা শোনার পর তার প্রতিক্রিয়া কেমন, সেটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। তিনি যদি আপনাকে বোঝেন, সহমর্মিতা দেখান এবং আপনাকে আশ্বস্ত করেন, তাহলে বুঝবেন তিনি একজন ভরসাযোগ্য মানুষ হতে পারেন।

পেশাদার সাহায্য

যদি মনে করেন এই ভয়টা খুব গভীর এবং নিজের চেষ্টায় কাটিয়ে উঠতে পারছেন না, তাহলে একজন ভালো কাউন্সিলর বা থেরাপিস্টের সাহায্য নিতে পারেন। এটি কোনও দুর্বলতার লক্ষণ নয়, বরং নিজের মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন নেওয়ার একটি বুদ্ধিমান এবং সাহসী পদক্ষেপ। একজন পেশাদার আপনাকে আপনার অতীতের ক্ষতগুলো সারিয়ে তুলতে এবং স্বাস্থ্যকর নতুন সম্পর্ক তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় মানসিক শক্তি অর্জনে সাহায্য করতে পারেন।

শেষ কথা

আপনি আপনার মায়ের মানবিকতা এবং দায়িত্বশীলতার কথা বলেছেন। মনে রাখবেন, আপনি সেই শক্তিশালী মায়েরই সন্তান। আপনার ভেতরেও সেই শক্তি রয়েছে। বাবার দেওয়া ক্ষত আপনার পরিচয় নয়, আপনার মায়ের দেওয়া শক্তিই আপনার আসল পরিচয়। আপনি ভালোবাসার যোগ্য এবং একটি সুন্দর, আস্থাশীল সম্পর্ক আপনার প্রাপ্য। নিজেকে সেই সুযোগটা দিন। নতুন মানুষটি হয়তো সেই ব্যক্তি যিনি আপনার ভাবনার জগতটা বদলে দেবেন এবং দেখাবেন যে পৃথিবীতে ভরসা করার মতো মানুষও আছে।

সাহস করে এক পা এগিয়ে দেখুন, হয়তো আপনার জন্য অসাধারণ সুন্দর একটি ভবিষ্যৎ অপেক্ষা করছে। আপনার জন্য অনেক শুভকামনা।

ট্যাগঃ

ক্যালকুলেটরে সম্পর্কের হিসেব করবেন না

সময়ঃ ১২:০২:৩৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫

প্রশ্ন

আমি একটি ব্রোকেন পরিবারের মেয়ে সন্তান। আমার বয়স ৩২। আমি বড় হয়েছি আমার মায়ের কাছে। বাবার সঙ্গে আমাদের কোনও সম্পর্কই ছিল না কোনোদিন। তার প্রতি ছোটবেলা থেকে অশ্রদ্ধা জন্ম নেওয়ায় আমি কোনোদিন কোনও ছেলেকে বিশ্বাস করতে পারিনি। আমার মায়ের মতো এত মানবিক, দায়িত্বশীল মানুষকে যখন অসম্মানিত করে ছেড়ে যাওয়া যায় তখন আসলে সবই সম্ভব। এভাবে ভাবতে গিয়ে একসময় লক্ষ্য করলাম, আমি ছেলেদের ভয় পাই, আমি কোনও ভরসার জায়গা খুঁজে পাই না। ইদানীং আমার একটি সম্পর্ক হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। আমরা পরস্পরকে পছন্দ করছি, কিন্তু কোনও একটা সম্পর্কে জড়ানোর সাহস আমার নেই। আমি কি এ থেকে বের হতে পারবো?

উত্তর

প্রথমেই সবচেয়ে জরুরি কথাটা বলি। হ্যাঁ, আপনি অবশ্যই এই অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে পারবেন। আপনার মনে যে প্রশ্নটি জেগেছে, ‘আমি কি পারব?’—এই প্রশ্নটিই আপনার যাত্রার প্রথম এবং সবচেয়ে সাহসী পদক্ষেপ। আপনি সমস্যাটা বুঝতে পেরেছেন এবং এর থেকে উত্তরণ চাইছেন, এটাই অর্ধেক সমাধান।

কেন এমনটা হচ্ছে, তা বোঝা জরুরি

ছোটবেলায় আমরা অজান্তেই আমাদের জীবনে প্রথম দেখা পুরুষ, অর্থাৎ বাবার চরিত্রকে সব পুরুষের ওপর আরোপ করে ফেলি। আপনার বাবার দায়িত্বহীনতা এবং আপনার মায়ের প্রতি তার অসম্মান আপনার মনে একটি গভীর ক্ষত তৈরি করেছে। আপনার অবচেতন মন আপনাকে বারবার বলছে, ‘সব পুরুষই এমন। কেউই বিশ্বাসযোগ্য নয়।’ এটা আপনার দোষ নয়, এটা আপনার পরিস্থিতির তৈরি করা একটা আত্মরক্ষার কৌশল। আপনার মন আপনাকে সম্ভাব্য কষ্ট থেকে বাঁচানোর জন্য এই দেয়াল তৈরি করেছে।

আদর্শের সংঘাত অন্যতম কারণ

আপনি আপনার মাকে একজন মানবিক এবং দায়িত্বশীল মানুষ হিসেবে দেখেছেন। যখন এমন একজন আদর্শ মানুষ কষ্ট পান, তখন মনে এই বিশ্বাস জন্মায় যে পৃথিবীতে ভালো বা দায়িত্বশীল হওয়ার কোনও পুরস্কার নেই, বরং কষ্টই সার হয়। এই ভাবনাটা ভরসা এবং আস্থার ধারণাকে ভেতর থেকে নাড়িয়ে দেয়।

ভাবুন, কীভাবে এই দেয়াল ভাঙবেন

এখন মূল প্রশ্ন হলো, এই ভয় এবং অবিশ্বাসের চক্র থেকে কীভাবে বের হবেন। এটা একদিনে হবে না, এটি একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া।

আপনার অনুভূতিকে স্বীকৃতি দিন

প্রথমেই মেনে নিন যে আপনার ভয় পাওয়াটা স্বাভাবিক। নিজেকে এর জন্য দোষারোপ করবেন না। বলবেন না, ‘আমারই হয়তো কোনও সমস্যা।’ বরং নিজেকে বলুন, ‘আমার সাথে যা হয়েছে, তারপর ভয় পাওয়াটাই স্বাভাবিক। এখন আমি এই ভয়কে জয় করতে শিখব।’

অতীতকে বিচ্ছিন্ন করেন

আপনাকে সচেতনভাবে আপনার বাবাকে একজন ‘ব্যক্তি’ হিসেবে দেখতে হবে, ‘সমস্ত পুরুষজাতির প্রতিনিধি’ হিসেবে নয়। পৃথিবীতে কোটি কোটি পুরুষ আছে এবং তাদের প্রত্যেকে আলাদা। আপনার বাবার ভুলের জন্য পৃথিবীর সব পুরুষকে দায়ী করা বা তাদের থেকে একই আচরণ প্রত্যাশা করা আপনার বর্তমান এবং ভবিষ্যতের জন্য সবচেয়ে বড় বাধা।

নতুন সম্পর্ককে একটি সুযোগ দিন

আপনার জীবনে যে নতুন মানুষটির আগমন ঘটেছে, তিনি আপনার জন্য একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা হতে পারেন। কিন্তু তাড়াহুড়ো করার কোনও প্রয়োজন নেই। মানুষটিকে তার নিজের যোগ্যতা এবং আচরণের ভিত্তিতে দেখুন। আপনার বাবার সঙ্গে তার তুলনা করবেন না। দেখুন তিনি কীভাবে কথা বলেন, অন্যদের সঙ্গে কেমন আচরণ করেন, প্রতিশ্রুতি কতটা রক্ষা করেন, আপনার প্রতি তিনি কতটা শ্রদ্ধাশীল। তাকে চেনাজানার জন্য নিজেকে পর্যাপ্ত সময় দিন।

বন্ধুত্ব দিয়ে শুরু করুন

সম্পর্কের শুরুতেই ‘প্রেম’ বা ‘COMMITMENT’-এর মতো বড় শব্দগুলো নিয়ে ভেবে নিজেকে চাপে ফেলবেন না। সম্পর্কটাকে একটি সুন্দর বন্ধুত্ব হিসেবে শুরু করুন। বন্ধুত্বে আস্থা তৈরি করা সহজ হয়। যখন আপনি তাকে বন্ধু হিসেবে বিশ্বাস করতে শুরু করবেন, তখন প্রেমিক হিসেবে আস্থা রাখাও সহজতর হবে। সম্পর্কের গতি নির্ধারণ করার সম্পূর্ণ অধিকার আপনার। যদি আপনার মনে হয় সবকিছু খুব দ্রুত এগোচ্ছে, তাকে জানান। একজন সংবেদনশীল এবং সঠিক মানুষ আপনার এই অবস্থাকে অবশ্যই সম্মান জানাবেন।

খোলামেলা কিন্তু সঠিক সময়ে আলোচনা

যখন আপনাদের মধ্যে কিছুটা স্বস্তি এবং আস্থার সম্পর্ক তৈরি হবে, তখন আপনি আপনার ভয় এবং অতীতের কথা তাকে জানাতে পারেন। অভিযোগের সুরে নয়, তাকে বলার সময় এটা অভিযোগের মতো শোনানো উচিত নয় যে, ‘আমি পুরুষদের বিশ্বাস করি না’। বরং নিজের দুর্বলতা এবং ভয় প্রকাশ করার মতো করে বলুন। যেমন: ‘আমার পারিবারিক অভিজ্ঞতার কারণে নতুন কোনও সম্পর্কে আস্থা রাখতে আমার খুব ভয় হয় এবং একটু বেশি সময় লাগে। আমি এই ভয়টা কাটিয়ে উঠতে চাই এবং আশা করি তুমি আমাকে এই সময়টা দেবে।’

এরপর তার প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করুন। আপনার এই সংবেদনশীল কথা শোনার পর তার প্রতিক্রিয়া কেমন, সেটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। তিনি যদি আপনাকে বোঝেন, সহমর্মিতা দেখান এবং আপনাকে আশ্বস্ত করেন, তাহলে বুঝবেন তিনি একজন ভরসাযোগ্য মানুষ হতে পারেন।

পেশাদার সাহায্য

যদি মনে করেন এই ভয়টা খুব গভীর এবং নিজের চেষ্টায় কাটিয়ে উঠতে পারছেন না, তাহলে একজন ভালো কাউন্সিলর বা থেরাপিস্টের সাহায্য নিতে পারেন। এটি কোনও দুর্বলতার লক্ষণ নয়, বরং নিজের মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন নেওয়ার একটি বুদ্ধিমান এবং সাহসী পদক্ষেপ। একজন পেশাদার আপনাকে আপনার অতীতের ক্ষতগুলো সারিয়ে তুলতে এবং স্বাস্থ্যকর নতুন সম্পর্ক তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় মানসিক শক্তি অর্জনে সাহায্য করতে পারেন।

শেষ কথা

আপনি আপনার মায়ের মানবিকতা এবং দায়িত্বশীলতার কথা বলেছেন। মনে রাখবেন, আপনি সেই শক্তিশালী মায়েরই সন্তান। আপনার ভেতরেও সেই শক্তি রয়েছে। বাবার দেওয়া ক্ষত আপনার পরিচয় নয়, আপনার মায়ের দেওয়া শক্তিই আপনার আসল পরিচয়। আপনি ভালোবাসার যোগ্য এবং একটি সুন্দর, আস্থাশীল সম্পর্ক আপনার প্রাপ্য। নিজেকে সেই সুযোগটা দিন। নতুন মানুষটি হয়তো সেই ব্যক্তি যিনি আপনার ভাবনার জগতটা বদলে দেবেন এবং দেখাবেন যে পৃথিবীতে ভরসা করার মতো মানুষও আছে।

সাহস করে এক পা এগিয়ে দেখুন, হয়তো আপনার জন্য অসাধারণ সুন্দর একটি ভবিষ্যৎ অপেক্ষা করছে। আপনার জন্য অনেক শুভকামনা।