০২:৫২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৬ নভেম্বর ২০২৫, ২১ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জুলাই আন্দোলনকারীদের সতর্ক থাকার পরামর্শ ইউজিসি চেয়ারম্যানের

  • Voice24 Admin
  • সময়ঃ ১২:১৩:৪২ অপরাহ্ন, বুধবার, ৫ নভেম্বর ২০২৫
  • ৫৪৩ Time View

জুলাই আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের মর্যাদা অক্ষুণ্ন রাখতে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এস এম এ ফায়েজ।

বুধবার (৫ নভেম্বর) ‘সোশ্যাল ইমোশনাল ওয়েলবিং অব ইউনিভার্সিটি স্টুডেন্টস’ শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ পরামর্শ দেন। ইউজিসি ও ইউনেস্কো যৌথভাবে কমিশনের অডিটোরিয়ামে এই কর্মশালা আয়োজন করে।

ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এস এম এ ফায়েজ বলেন, ‘তোমরা (শিক্ষার্থী) বড় যোদ্ধা, দেশের পরিবর্তনকারী। তোমাদের অবদানের জন্য সারা বিশ্ব আমাদের সম্মান করছে। জাতি তোমাদের সম্মান করে, অনেক কিছু প্রত্যাশাও করে। জাতির প্রত্যাশা পূরণ এবং জুলাই যোদ্ধাদের নিয়ে যেন কোনও প্রশ্ন না ওঠে সে বিষয়ে সজাগ থাকতে হবে।’

অধ্যাপক ফায়েজ বলেন, ‘জুলাইয়ের ট্রমা থেকে শিক্ষার্থীদের বের হয়ে আসতে সামাজিক ও মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা সহায়ক হবে। জুলাই স্মৃতিচারণায় শিগগিরই ইউজিসি একটি সেমিনার আয়োজন করবে।’

ইউজিসির ইন্টারন্যাশনাল কোলাবরেশন বিভাগের পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) জেসমিন পারভিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তানজীমউদ্দিন খান, অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, অধ্যাপক ড. মাছুমা হাবিব ও অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আইয়ুব ইসলাম।

অধ্যাপক তানজীমউদ্দিন খান বলেন, ‘৫ আগস্টের আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসরুম ও হলগুলোতে স্বৈরাচারী ব্যবস্থা জারি ছিল। শিক্ষার্থীরা নানা ধরনের ভোগান্তি ও মানসিক অশান্তিতে ছিল। খুব কম শিক্ষক এ সময় শিক্ষার্থীদের পাশে ছিলেন। এই অবস্থার পরিবর্তনে শিক্ষার্থীরা অদম্য শক্তি দেখিয়েছে।’

অধ্যাপক তানজীমউদ্দিন খান আরও বলেন, ‘পঠন-পাঠনে মানসিক স্বাস্থ্য খুবই গুরিুত্বপূর্ণ। ইউজিসি শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সজাগ।’

অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা ব্যক্তি স্বার্থকে উপক্ষো করে দেশের স্বার্থে আন্দোলন করেছে। এই আন্দোলনে শিক্ষার্থীসহ ১ হাজার ৪০০ জন শহীদ এবং প্রায় ২০ হাজার শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। আন্দোলন পরবর্তী সময়ে শিক্ষার্থীরা নানা ধরনের ট্রমায় আছেন। এই ট্রমা কমিয়ে আনতে ইউজিসি উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।’

পাশাপাশি শিক্ষায় উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করতে তারা কাজ করছে বলে জানান অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন।

অধ্যাপক মাছুমা হাবিব বলেন, ‘জুলাই আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের সামাজিক ও মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষায় ইউজিসি নিরন্তর কাজ করে যাবে।’

অধ্যাপক আইয়ুব ইসলাম বলেন, ‘তরুণ প্রজন্মকে দক্ষ করে গড়ে তুলতে হলে তাদের সামাজিক ও মানসিক দক্ষতা বৃদ্ধি করা জরুরি। প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থা এ ক্ষেত্রে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। ইউজিসির সামাজিক ও মানসিক দক্ষতা বৃদ্ধির উদ্যোগে শিক্ষার্থীরা ব্যাপকভাবে উপকৃত হবেন।’

কর্মশালায় শিক্ষার্থীরা দাবি করেন জুলাই আন্দোলনের ফলেই বিশ্ববিদ্যিালয়গুলোতে সুষ্ঠু পরিবেশে ছাত্র সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যিালয়ের হলে সিট পেতে শিক্ষার্থীদের কোনও ধরনের অসুবিধা হচ্ছে না। বিশ্ববিদ্যিালয়ে র‌্যাগিংয়ের ঘটনাও ঘটছে না।

শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন ধরনের নিয়োগে স্বচ্ছতা ও মেধার প্রাধ্যন্য দেওয়া এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৫ শতাংশ আয়কর আদায় বন্ধে ইউজিসির হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

কর্মশালায় জুলাই আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থী রিফাত হাওলাদার, সানজিদা তন্বী, রবিউস সানী, মাহফুজা খাতুন এবং উমামা ফাতেমাসহ কর্মশালায় ২২টি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন।

উল্লেখ্য, ইউনেস্কোর সহায়তায় সামাজিক ও মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা নামে ইউজিসি একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। এর আওতায় চলতি নভেম্বর মাস থেকে ২২টি পাবলিক ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০ হাজার শিক্ষার্থীকে সামাজিক ও মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা সেবা দেওয়া হবে।

ট্যাগঃ

জুলাই আন্দোলনকারীদের সতর্ক থাকার পরামর্শ ইউজিসি চেয়ারম্যানের

সময়ঃ ১২:১৩:৪২ অপরাহ্ন, বুধবার, ৫ নভেম্বর ২০২৫

জুলাই আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের মর্যাদা অক্ষুণ্ন রাখতে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এস এম এ ফায়েজ।

বুধবার (৫ নভেম্বর) ‘সোশ্যাল ইমোশনাল ওয়েলবিং অব ইউনিভার্সিটি স্টুডেন্টস’ শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ পরামর্শ দেন। ইউজিসি ও ইউনেস্কো যৌথভাবে কমিশনের অডিটোরিয়ামে এই কর্মশালা আয়োজন করে।

ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এস এম এ ফায়েজ বলেন, ‘তোমরা (শিক্ষার্থী) বড় যোদ্ধা, দেশের পরিবর্তনকারী। তোমাদের অবদানের জন্য সারা বিশ্ব আমাদের সম্মান করছে। জাতি তোমাদের সম্মান করে, অনেক কিছু প্রত্যাশাও করে। জাতির প্রত্যাশা পূরণ এবং জুলাই যোদ্ধাদের নিয়ে যেন কোনও প্রশ্ন না ওঠে সে বিষয়ে সজাগ থাকতে হবে।’

অধ্যাপক ফায়েজ বলেন, ‘জুলাইয়ের ট্রমা থেকে শিক্ষার্থীদের বের হয়ে আসতে সামাজিক ও মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা সহায়ক হবে। জুলাই স্মৃতিচারণায় শিগগিরই ইউজিসি একটি সেমিনার আয়োজন করবে।’

ইউজিসির ইন্টারন্যাশনাল কোলাবরেশন বিভাগের পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) জেসমিন পারভিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তানজীমউদ্দিন খান, অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, অধ্যাপক ড. মাছুমা হাবিব ও অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আইয়ুব ইসলাম।

অধ্যাপক তানজীমউদ্দিন খান বলেন, ‘৫ আগস্টের আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসরুম ও হলগুলোতে স্বৈরাচারী ব্যবস্থা জারি ছিল। শিক্ষার্থীরা নানা ধরনের ভোগান্তি ও মানসিক অশান্তিতে ছিল। খুব কম শিক্ষক এ সময় শিক্ষার্থীদের পাশে ছিলেন। এই অবস্থার পরিবর্তনে শিক্ষার্থীরা অদম্য শক্তি দেখিয়েছে।’

অধ্যাপক তানজীমউদ্দিন খান আরও বলেন, ‘পঠন-পাঠনে মানসিক স্বাস্থ্য খুবই গুরিুত্বপূর্ণ। ইউজিসি শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সজাগ।’

অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা ব্যক্তি স্বার্থকে উপক্ষো করে দেশের স্বার্থে আন্দোলন করেছে। এই আন্দোলনে শিক্ষার্থীসহ ১ হাজার ৪০০ জন শহীদ এবং প্রায় ২০ হাজার শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। আন্দোলন পরবর্তী সময়ে শিক্ষার্থীরা নানা ধরনের ট্রমায় আছেন। এই ট্রমা কমিয়ে আনতে ইউজিসি উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।’

পাশাপাশি শিক্ষায় উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করতে তারা কাজ করছে বলে জানান অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন।

অধ্যাপক মাছুমা হাবিব বলেন, ‘জুলাই আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের সামাজিক ও মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষায় ইউজিসি নিরন্তর কাজ করে যাবে।’

অধ্যাপক আইয়ুব ইসলাম বলেন, ‘তরুণ প্রজন্মকে দক্ষ করে গড়ে তুলতে হলে তাদের সামাজিক ও মানসিক দক্ষতা বৃদ্ধি করা জরুরি। প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থা এ ক্ষেত্রে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। ইউজিসির সামাজিক ও মানসিক দক্ষতা বৃদ্ধির উদ্যোগে শিক্ষার্থীরা ব্যাপকভাবে উপকৃত হবেন।’

কর্মশালায় শিক্ষার্থীরা দাবি করেন জুলাই আন্দোলনের ফলেই বিশ্ববিদ্যিালয়গুলোতে সুষ্ঠু পরিবেশে ছাত্র সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যিালয়ের হলে সিট পেতে শিক্ষার্থীদের কোনও ধরনের অসুবিধা হচ্ছে না। বিশ্ববিদ্যিালয়ে র‌্যাগিংয়ের ঘটনাও ঘটছে না।

শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন ধরনের নিয়োগে স্বচ্ছতা ও মেধার প্রাধ্যন্য দেওয়া এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৫ শতাংশ আয়কর আদায় বন্ধে ইউজিসির হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

কর্মশালায় জুলাই আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থী রিফাত হাওলাদার, সানজিদা তন্বী, রবিউস সানী, মাহফুজা খাতুন এবং উমামা ফাতেমাসহ কর্মশালায় ২২টি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন।

উল্লেখ্য, ইউনেস্কোর সহায়তায় সামাজিক ও মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা নামে ইউজিসি একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। এর আওতায় চলতি নভেম্বর মাস থেকে ২২টি পাবলিক ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০ হাজার শিক্ষার্থীকে সামাজিক ও মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা সেবা দেওয়া হবে।