০৮:৫১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ৯ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ন্যায়বিচার নিশ্চিতেই ব্যক্তিত্ব, দক্ষতা ও সাহসিকতা জরুরি: কমিশন সভাপতি

  • Voice24 Admin
  • সময়ঃ ১২:০৩:০৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৫
  • ৫৫৭ Time View

গুম সংক্রান্ত মামলায় ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে বিচারকদের ব্যক্তিত্ব, দক্ষতা, সক্ষমতা, নিরপেক্ষতা ও সাহসিকতার গুরুত্ব তুলে ধরেছেন গুম সংক্রান্ত কমিশন অব ইনকোয়ারি’র সভাপতি বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘প্রতিটি মামলা সমান উদ্যম ও নিষ্ঠার সঙ্গে বিচার করতে হবে বিচারকদের। আদালতের পোশাক পরার সময় প্রতিদিন সংবিধানের মূল আদর্শ স্মরণ করা প্রয়োজন।’

শনিবার (২৯ নভেম্বর) রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে ‘এনশিউরিং জাস্টিস: দ্য রুল অফ দ্য জুডিশিয়ারি ইন অ্যাড্রেসিং এনফোর্সড ডিসঅ্যাপেয়ারেন্স’ শীর্ষক দিনব্যাপী চতুর্থ কর্মশালার উদ্বোধনী অধিবেশনে তিনি এসব কথা বলেন। গুম সংক্রান্ত কমিশনের উদ্যোগে এবং জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয়ের (ওএইচসিএইচআর) সহযোগিতায় কর্মশালাটি অনুষ্ঠিত হয়।

বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী আরও বলেন, ‘আমাদের এমন বিচারব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে, যেখানে ঢাকার একজন ফেরিওয়ালা, খুলনার পোশাকশ্রমিক কিংবা সিলেটের একজন রিকশাচালকও আদালতের প্রতি পূর্ণ আস্থা রাখতে পারেন।’

কর্মশালার উদ্বোধনী বক্তব্যে ওএইচসিএইচআর-এর চিফ অব মিশন হুমা খান বলেন, ‘গুমের ভিকটিমদের করুণ পরিণতি ও তাদের পরিবারের দীর্ঘ অনিশ্চয়তা সমাজকে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন করে তুলছে। ভয়ভীতি, তদন্তের জটিলতা এবং প্রভাবশালী মহলের চাপ ন্যায়বিচারের পথে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।’ একইসঙ্গে কমিশনের পেশাদারত্বের প্রশংসা করেন তিনি।

কমিশনের সদস্য বিচারপতি মো. ফরিদ আহমেদ শিবলী বলেন, ‘গুম-সংক্রান্ত মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি, সাক্ষী সুরক্ষা ও ভিকটিম পরিবারের আইনি সহায়তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় আইনি সংস্কারের প্রস্তাব কমিশন প্রস্তুত করছে।’

কমিশনের সদস্য মো. নূর খান লিটন কর্মশালার সেশনে ভিকটিমদের অধিকার নিশ্চিতকরণ ও তাদের বাস্তব অভিজ্ঞতার ওপর আলোকপাত করেন। এছাড়া আইন ও বিচার বিভাগের সচিব লিয়াকত আলী মোল্লাও বক্তব্য রাখেন।

ওয়ার্কিং সেশনে গুম প্রতিরোধ ও বিচারের পথ সুগম করতে একাধিক প্রস্তাব উঠে আসে। সেগুলো হচ্ছে- স্বতন্ত্র তদন্ত সংস্থা প্রতিষ্ঠা, মামলার মনিটরিং সেল গঠন, মানবাধিকার মানদণ্ডের প্রয়োগ জোরদার, বিচারকদের জন্য বিশেষায়িত প্রশিক্ষণ, ভিকটিমদের সাইকোলজিক্যাল ও লিগ্যাল সহায়তা, আর্থিক ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসন, সন্ত্রাসবিরোধী আইন ও অস্ত্র আইন সংশোধন, অনলাইন জিডি সহজীকরণ, অগ্রাধিকারভিত্তিক মামলা নিষ্পত্তি, মিথ্যা মামলা নিরসনে ম্যাজিস্ট্রেটদের ক্ষমতা বৃদ্ধি, কমিশন ও বিচার বিভাগের তথ্য বিনিময় জোরদার।

কর্মশালা পরিচালনা করেন কমিশনের সদস্য ড. নাবিলা ইদ্রিস। দেশের বিভিন্ন আদালত ও ট্রাইব্যুনালে কর্মরত ৯০ জন বিচারক এতে অংশ নেন। কমিশনের আয়োজিত চারটি কর্মশালার এটি ছিল শেষটি।

ট্যাগঃ
জনপ্রিয় খবর

ন্যায়বিচার নিশ্চিতেই ব্যক্তিত্ব, দক্ষতা ও সাহসিকতা জরুরি: কমিশন সভাপতি

সময়ঃ ১২:০৩:০৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৫

গুম সংক্রান্ত মামলায় ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে বিচারকদের ব্যক্তিত্ব, দক্ষতা, সক্ষমতা, নিরপেক্ষতা ও সাহসিকতার গুরুত্ব তুলে ধরেছেন গুম সংক্রান্ত কমিশন অব ইনকোয়ারি’র সভাপতি বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘প্রতিটি মামলা সমান উদ্যম ও নিষ্ঠার সঙ্গে বিচার করতে হবে বিচারকদের। আদালতের পোশাক পরার সময় প্রতিদিন সংবিধানের মূল আদর্শ স্মরণ করা প্রয়োজন।’

শনিবার (২৯ নভেম্বর) রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে ‘এনশিউরিং জাস্টিস: দ্য রুল অফ দ্য জুডিশিয়ারি ইন অ্যাড্রেসিং এনফোর্সড ডিসঅ্যাপেয়ারেন্স’ শীর্ষক দিনব্যাপী চতুর্থ কর্মশালার উদ্বোধনী অধিবেশনে তিনি এসব কথা বলেন। গুম সংক্রান্ত কমিশনের উদ্যোগে এবং জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয়ের (ওএইচসিএইচআর) সহযোগিতায় কর্মশালাটি অনুষ্ঠিত হয়।

বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী আরও বলেন, ‘আমাদের এমন বিচারব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে, যেখানে ঢাকার একজন ফেরিওয়ালা, খুলনার পোশাকশ্রমিক কিংবা সিলেটের একজন রিকশাচালকও আদালতের প্রতি পূর্ণ আস্থা রাখতে পারেন।’

কর্মশালার উদ্বোধনী বক্তব্যে ওএইচসিএইচআর-এর চিফ অব মিশন হুমা খান বলেন, ‘গুমের ভিকটিমদের করুণ পরিণতি ও তাদের পরিবারের দীর্ঘ অনিশ্চয়তা সমাজকে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন করে তুলছে। ভয়ভীতি, তদন্তের জটিলতা এবং প্রভাবশালী মহলের চাপ ন্যায়বিচারের পথে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।’ একইসঙ্গে কমিশনের পেশাদারত্বের প্রশংসা করেন তিনি।

কমিশনের সদস্য বিচারপতি মো. ফরিদ আহমেদ শিবলী বলেন, ‘গুম-সংক্রান্ত মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি, সাক্ষী সুরক্ষা ও ভিকটিম পরিবারের আইনি সহায়তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় আইনি সংস্কারের প্রস্তাব কমিশন প্রস্তুত করছে।’

কমিশনের সদস্য মো. নূর খান লিটন কর্মশালার সেশনে ভিকটিমদের অধিকার নিশ্চিতকরণ ও তাদের বাস্তব অভিজ্ঞতার ওপর আলোকপাত করেন। এছাড়া আইন ও বিচার বিভাগের সচিব লিয়াকত আলী মোল্লাও বক্তব্য রাখেন।

ওয়ার্কিং সেশনে গুম প্রতিরোধ ও বিচারের পথ সুগম করতে একাধিক প্রস্তাব উঠে আসে। সেগুলো হচ্ছে- স্বতন্ত্র তদন্ত সংস্থা প্রতিষ্ঠা, মামলার মনিটরিং সেল গঠন, মানবাধিকার মানদণ্ডের প্রয়োগ জোরদার, বিচারকদের জন্য বিশেষায়িত প্রশিক্ষণ, ভিকটিমদের সাইকোলজিক্যাল ও লিগ্যাল সহায়তা, আর্থিক ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসন, সন্ত্রাসবিরোধী আইন ও অস্ত্র আইন সংশোধন, অনলাইন জিডি সহজীকরণ, অগ্রাধিকারভিত্তিক মামলা নিষ্পত্তি, মিথ্যা মামলা নিরসনে ম্যাজিস্ট্রেটদের ক্ষমতা বৃদ্ধি, কমিশন ও বিচার বিভাগের তথ্য বিনিময় জোরদার।

কর্মশালা পরিচালনা করেন কমিশনের সদস্য ড. নাবিলা ইদ্রিস। দেশের বিভিন্ন আদালত ও ট্রাইব্যুনালে কর্মরত ৯০ জন বিচারক এতে অংশ নেন। কমিশনের আয়োজিত চারটি কর্মশালার এটি ছিল শেষটি।