১২:৪৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ০২ অগাস্ট ২০২৫, ১৮ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ওয়াচ এয়ার শো

  • Voice24 Admin
  • Update Time : ১২:১৭:২৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১ অগাস্ট ২০২৫
  • ৫৪৫ Time View

সে লক্ষ করেছে, তার মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা নেই। বেঁচে থাকার স্বয়ংক্রিয় তাগিদ আছে বরং। তাই ঘরের এক জায়গার জিনিস আরেক জায়গায় সরানোর মতো নিজেকে নাড়াচাড়ার মধ্যে জীবন্ত রাখে, সতেজ রাখতে চায়। কখনো কখনো গভীর সংকটে নিজেকে সামনে দাঁড় করিয়ে দর্শক আসনে বসে সে। তারপর নানা অ্যাঙ্গেলে আয়না ধরে নিজেকে নিরিখ করে দেখতে থাকে দর্শকের চোখ দিয়ে।

এখানে কি মেডিটেশন সম্ভব? মনিটরে প্রেয়ারের কম্পাস হঠাৎ ভাসতে দেখে সে। কম্পাসের কাঁটা ঊর্ধ্বে কিবলা দেখাচ্ছে তির চিহ্ন দিয়ে।

সে পিঠ সোজা করে বসে চোখ বোজে। এখন স্বাভাবিক শ্বাস-প্রশ্বাস ও দমের ওপর রাখতে হবে পুরো খেয়াল। শ্বাস নিচ্ছে যতটা সময়, শ্বাস ছাড়াটা হবে এর দ্বিগুণ। তার অন্ধচোখের ঘোলা-হলুদ দৃষ্টি কিছুটা সময় নাকের ডগায় স্থির থেকে চোরের মতো নিঃশব্দে সরে যায়। দরজার তালা খুলে বাসায় ঢোকে। ধীরে ধীরে আসবাবে, দেয়ালে চোখ বোলায়। গন্ধ শোঁকে। শূন্য ঘর-বাড়ি। মৃত-নির্জীব। এত দিনের সংসার অবহেলায় ক্ষয়ে যাচ্ছে! ধুলায় মিশে যাচ্ছে! না, সিঁড়ি, ছাদ, বারান্দায় মানুষটার চলাফেরার শব্দ, আগে যেমন ছিল, তেমনই সাবলীল। তবে কিছুটা অধৈর্য। ঘন ঘন সময় দেখছে, তার জন্য অপেক্ষা করছে।

বেশ খানিকটা জোরজবরদস্তির পর দৃষ্টিটা আবার নাকের ডগায় ফিরে আসে। এখন স্বাভাবিক শ্বাস-প্রশ্বাস…

মানুষটা বাসার সামনের রাস্তা দিয়ে কাত হয়ে হেঁটে যাচ্ছে। কাছে যেতে মনে হলো, খুব অসুস্থ। আরও কাছে যেতে মাথাটা তার কাঁধে ফেলে দিল। আর নড়ল না।

সে চোখ খুলে নড়েচড়ে বসে।

যারা মানুষটাকে কাছ থেকে শেষ দেখা দেখেছে, ওরা তার চোখের কোলে কান্নার দাগ দেখেছে। সে শুধু প্রিয় মানুষটার কপাল ছুঁয়েছিল। খুব ঠান্ডা, বরফশীতল, যা আগে সে কখনো ছিল না। তখনো লাইফ সাপোর্টের মোটা নল ঠোঁটের কোণে ঝুলেছিল।

সে এয়ার ক্রুকে ডেকে পানি চায়। অস্থির চোখে তাকায় এদিক-ওদিক। আবার শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়ামে ফিরে যাবে? ধ্যানে বসে নিজের ঘরদুয়ার আর বাসার সামনের রাস্তায় হানা না দিয়ে মহাশূন্যযানের মতো যদি উড়তে পারত! বা মনিটরের মানচিত্রের শহরগুলোর মতো যদি স্রেফ মহাশূন্য আঁকড়ে ভেসে থাকতে পারত!

ট্যাগঃ

ইমিগ্রেশন থেকে আ.লীগ নেতাকে ফেরত পাঠালো বেনাপোল পুলিশ

ওয়াচ এয়ার শো

Update Time : ১২:১৭:২৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১ অগাস্ট ২০২৫

সে লক্ষ করেছে, তার মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা নেই। বেঁচে থাকার স্বয়ংক্রিয় তাগিদ আছে বরং। তাই ঘরের এক জায়গার জিনিস আরেক জায়গায় সরানোর মতো নিজেকে নাড়াচাড়ার মধ্যে জীবন্ত রাখে, সতেজ রাখতে চায়। কখনো কখনো গভীর সংকটে নিজেকে সামনে দাঁড় করিয়ে দর্শক আসনে বসে সে। তারপর নানা অ্যাঙ্গেলে আয়না ধরে নিজেকে নিরিখ করে দেখতে থাকে দর্শকের চোখ দিয়ে।

এখানে কি মেডিটেশন সম্ভব? মনিটরে প্রেয়ারের কম্পাস হঠাৎ ভাসতে দেখে সে। কম্পাসের কাঁটা ঊর্ধ্বে কিবলা দেখাচ্ছে তির চিহ্ন দিয়ে।

সে পিঠ সোজা করে বসে চোখ বোজে। এখন স্বাভাবিক শ্বাস-প্রশ্বাস ও দমের ওপর রাখতে হবে পুরো খেয়াল। শ্বাস নিচ্ছে যতটা সময়, শ্বাস ছাড়াটা হবে এর দ্বিগুণ। তার অন্ধচোখের ঘোলা-হলুদ দৃষ্টি কিছুটা সময় নাকের ডগায় স্থির থেকে চোরের মতো নিঃশব্দে সরে যায়। দরজার তালা খুলে বাসায় ঢোকে। ধীরে ধীরে আসবাবে, দেয়ালে চোখ বোলায়। গন্ধ শোঁকে। শূন্য ঘর-বাড়ি। মৃত-নির্জীব। এত দিনের সংসার অবহেলায় ক্ষয়ে যাচ্ছে! ধুলায় মিশে যাচ্ছে! না, সিঁড়ি, ছাদ, বারান্দায় মানুষটার চলাফেরার শব্দ, আগে যেমন ছিল, তেমনই সাবলীল। তবে কিছুটা অধৈর্য। ঘন ঘন সময় দেখছে, তার জন্য অপেক্ষা করছে।

বেশ খানিকটা জোরজবরদস্তির পর দৃষ্টিটা আবার নাকের ডগায় ফিরে আসে। এখন স্বাভাবিক শ্বাস-প্রশ্বাস…

মানুষটা বাসার সামনের রাস্তা দিয়ে কাত হয়ে হেঁটে যাচ্ছে। কাছে যেতে মনে হলো, খুব অসুস্থ। আরও কাছে যেতে মাথাটা তার কাঁধে ফেলে দিল। আর নড়ল না।

সে চোখ খুলে নড়েচড়ে বসে।

যারা মানুষটাকে কাছ থেকে শেষ দেখা দেখেছে, ওরা তার চোখের কোলে কান্নার দাগ দেখেছে। সে শুধু প্রিয় মানুষটার কপাল ছুঁয়েছিল। খুব ঠান্ডা, বরফশীতল, যা আগে সে কখনো ছিল না। তখনো লাইফ সাপোর্টের মোটা নল ঠোঁটের কোণে ঝুলেছিল।

সে এয়ার ক্রুকে ডেকে পানি চায়। অস্থির চোখে তাকায় এদিক-ওদিক। আবার শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়ামে ফিরে যাবে? ধ্যানে বসে নিজের ঘরদুয়ার আর বাসার সামনের রাস্তায় হানা না দিয়ে মহাশূন্যযানের মতো যদি উড়তে পারত! বা মনিটরের মানচিত্রের শহরগুলোর মতো যদি স্রেফ মহাশূন্য আঁকড়ে ভেসে থাকতে পারত!