০৯:৪৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৭ জুলাই ২০২৫, ১২ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জবাবদিহি নিশ্চিত করতে উচ্চকক্ষের ভূমিকা কতটুকু

  • Voice24 Admin
  • Update Time : ১২:১১:০৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৬ জুলাই ২০২৫
  • ৫৪৩ Time View

এটা সত্যি, রাজনৈতিক দলগুলো যে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার বিপদের কথা অনুভব করেছে, সেটার সমাধান প্রয়োজন। তবে এ সমস্যার সমাধান এককক্ষীয় সংসদীয় ব্যবস্থায়ও করা সম্ভব। এ ক্ষেত্রে সংসদ–সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম গ্রহণ, সংসদীয় প্রতিষ্ঠান শক্তিশালীকরণ এবং রাজনৈতিক দলগুলোতে অধিক গণতন্ত্রায়ণের অঙ্গীকার ও উদ্যোগ গ্রহণ প্রয়োজন। 

বর্তমান সংসদীয় কাঠামোকে শক্তিশালী করে সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের আধিপত্য হ্রাসে ইতিমধ্যে রাজনৈতিক দলগুলো কিছু ঐকমত্যে পৌঁছেছে। এর মধ্যে রয়েছে নির্দিষ্ট কিছু বিষয় বাদে সংসদ সদস্যদের ফ্লোর ক্রসিং অনুমোদন দেওয়া, নারী সংসদ সদস্যদের সংখ্যা বৃদ্ধি, বিরোধীদলীয় সংসদ সদস্যদের মধ্য থেকে সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান নিযুক্তকরণ, প্রধানমন্ত্রীর সময়কাল সীমিত করা, প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় প্রধান একই ব্যক্তি না হওয়া ইত্যাদি।

তবে সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠ দলকে জবাবদিহির মধ্যে রাখার ক্ষেত্রে আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। এর মধ্যে রয়েছে আর্থিক তদারকি–সংক্রান্ত কমিটিগুলোকে শক্তিশালী করা, সংসদ পরিচালনায় কর্মপ্রণালি কঠোরভাবে মেনে চলা, সংসদীয় কমিটিগুলোর কার্যক্রমের নিয়মিত মূল্যায়ন করা, স্পিকারের সভাপতিত্বে পরিচালিত কমিটিগুলোকে শক্তিশালী করা এবং সংসদীয় কমিটির কার্যক্রম পরিচালনায় বিশেষজ্ঞ মতামত নেওয়া।

সিপিডির গবেষণায় দেখা গেছে, সংসদীয় কার্যক্রমের নিয়মিত মূল্যায়নের জন্য একটি স্বাধীন ‘ওয়াচ ডগ’ প্রতিষ্ঠা করা প্রয়োজন। এ কমিশন সংসদীয় কার্যক্রম, সাংবিধানিক কার্যক্রম ও রাজনৈতিক কার্যক্রমের ওপর নিয়মিত মূল্যায়ন করবে। এ ক্ষেত্রে ইউরোপীয় আইনি কাঠামোতে প্রতিষ্ঠিত গণতান্ত্রিক কমিশন যা ‘ভেনিস কমিশন’ নামে পরিচিত, সে রকম একটি কমিশনের আলোকে বাংলাদেশের জন্য উপযুক্ত পার্লামেন্টের অধীন স্বাধীন কমিশন গঠন করা যেতে পারে। সিপিডি বর্তমানে এ কমিশনের কাঠামো ও কার্যক্রমের আওতা নিয়ে কাজ করছে।

ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম গবেষণা পরিচালক, সিপিডি

*মতামত লেখকের নিজস্ব

ট্যাগঃ

জবাবদিহি নিশ্চিত করতে উচ্চকক্ষের ভূমিকা কতটুকু

Update Time : ১২:১১:০৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৬ জুলাই ২০২৫

এটা সত্যি, রাজনৈতিক দলগুলো যে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার বিপদের কথা অনুভব করেছে, সেটার সমাধান প্রয়োজন। তবে এ সমস্যার সমাধান এককক্ষীয় সংসদীয় ব্যবস্থায়ও করা সম্ভব। এ ক্ষেত্রে সংসদ–সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম গ্রহণ, সংসদীয় প্রতিষ্ঠান শক্তিশালীকরণ এবং রাজনৈতিক দলগুলোতে অধিক গণতন্ত্রায়ণের অঙ্গীকার ও উদ্যোগ গ্রহণ প্রয়োজন। 

বর্তমান সংসদীয় কাঠামোকে শক্তিশালী করে সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের আধিপত্য হ্রাসে ইতিমধ্যে রাজনৈতিক দলগুলো কিছু ঐকমত্যে পৌঁছেছে। এর মধ্যে রয়েছে নির্দিষ্ট কিছু বিষয় বাদে সংসদ সদস্যদের ফ্লোর ক্রসিং অনুমোদন দেওয়া, নারী সংসদ সদস্যদের সংখ্যা বৃদ্ধি, বিরোধীদলীয় সংসদ সদস্যদের মধ্য থেকে সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান নিযুক্তকরণ, প্রধানমন্ত্রীর সময়কাল সীমিত করা, প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় প্রধান একই ব্যক্তি না হওয়া ইত্যাদি।

তবে সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠ দলকে জবাবদিহির মধ্যে রাখার ক্ষেত্রে আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। এর মধ্যে রয়েছে আর্থিক তদারকি–সংক্রান্ত কমিটিগুলোকে শক্তিশালী করা, সংসদ পরিচালনায় কর্মপ্রণালি কঠোরভাবে মেনে চলা, সংসদীয় কমিটিগুলোর কার্যক্রমের নিয়মিত মূল্যায়ন করা, স্পিকারের সভাপতিত্বে পরিচালিত কমিটিগুলোকে শক্তিশালী করা এবং সংসদীয় কমিটির কার্যক্রম পরিচালনায় বিশেষজ্ঞ মতামত নেওয়া।

সিপিডির গবেষণায় দেখা গেছে, সংসদীয় কার্যক্রমের নিয়মিত মূল্যায়নের জন্য একটি স্বাধীন ‘ওয়াচ ডগ’ প্রতিষ্ঠা করা প্রয়োজন। এ কমিশন সংসদীয় কার্যক্রম, সাংবিধানিক কার্যক্রম ও রাজনৈতিক কার্যক্রমের ওপর নিয়মিত মূল্যায়ন করবে। এ ক্ষেত্রে ইউরোপীয় আইনি কাঠামোতে প্রতিষ্ঠিত গণতান্ত্রিক কমিশন যা ‘ভেনিস কমিশন’ নামে পরিচিত, সে রকম একটি কমিশনের আলোকে বাংলাদেশের জন্য উপযুক্ত পার্লামেন্টের অধীন স্বাধীন কমিশন গঠন করা যেতে পারে। সিপিডি বর্তমানে এ কমিশনের কাঠামো ও কার্যক্রমের আওতা নিয়ে কাজ করছে।

ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম গবেষণা পরিচালক, সিপিডি

*মতামত লেখকের নিজস্ব