প্রাথমিক যুগের তাফসিরকারকগণ এই আয়াতটিকে কেয়ামত বা মহাপ্রলয়ের দৃশ্য হিসেবে ব্যাখ্যা করেছেন। তাঁদের মতে, আয়াতের পূর্বাপর ধারাবাহিকতা এই ধারণাকে সমর্থন করে।
এই আয়াতের ঠিক আগের আয়াতে আল্লাহ তায়ালা কিয়ামতের ভয়াবহতা প্রসঙ্গে বলেন, “আর যেদিন শিঙ্গায় ফুঁক দেওয়া হবে, সেদিন আল্লাহ যাদের চান তারা ছাড়া আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীর সবাই ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে পড়বে এবং সবাই তাঁর কাছে বিনীতভাবে উপস্থিত হবে।” (সুরা নামল, আয়াত: ৮৭)
তাঁদের যুক্তি হলো, কিয়ামতের বর্ণনার পরপরই পর্বতমালাকে মেঘের মতো চলমান হিসেবে উল্লেখ করা মানে এটি সেই দিনের দৃশ্য।
ইবনে কাসির (মৃ. ৭৭৪ হি.) বলেন, মানুষ পর্বতকে স্থির ও অপরিবর্তিত মনে করবে, অথচ সেগুলো মেঘের মতো দ্রুত স্থান পরিবর্তন করে সরে যাবে।
তিনি এই প্রসঙ্গে কেয়ামত বিষয়ক অন্যান্য আয়াত উল্লেখ করেন, যেমন:
“যেদিন আকাশমণ্ডল দুলতে থাকবে প্রবলভাবে, এবং পর্বতমালা চলতে থাকবে দ্রুতগতিতে।” (সুরা তুর, আয়াত: ৯-১০),
“আর তারা তোমাকে পর্বতমালা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে। সুতরাং তুমি বলো, আমার প্রতিপালক সেগুলোকে চূর্ণ-বিচূর্ণ করে উড়িয়ে দেবেন, অতঃপর তিনি সেগুলোকে মসৃণ সমতলভূমি করে দেবেন। তুমি তাতে কোনো বক্রতা ও উচ্চতা দেখবে না” (সুরা ত্বাহা, আয়াত: ১০৫-১০৭) (তাফসিরুল কোরআনিল আযিম, ৬/২০৪, দার তাইয়্যেবা, রিয়াদ, ১৯৯৯)
ঐতিহ্যবাহী তাফসির মতে, কিয়ামতের দিন যখন মহাজাগতিক শৃঙ্খলা ভেঙে যাবে, তখন পর্বতমালাও নিজ স্থান থেকে সরে গিয়ে চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে যাবে—সেই দৃশ্যকেই চলমান মেঘের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে।
Voice24 Admin 





