০১:৪৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৭ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গোপালগঞ্জে শিক্ষকের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীকে শ্লীলতাহানীর অভিযোগ

  • Voice24 Admin
  • সময়ঃ ১২:১৫:০৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১১ অগাস্ট ২০২৫
  • ৫৬৬ Time View

গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার করপাড়া ইউনিয়ন বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী শিক্ষক মিরাজ হোসেনের বিরুদ্ধে সপ্তম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর শ্লীলতাহানীর অভিযোগ উঠেছে।

রবিবার (১০ আগস্ট) এ ঘটনার প্রতিবাদে ক্লাস বর্জন করে অভিযুক্ত শিক্ষকের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে শিক্ষার্থীরা। 

এদিকে, এ ঘটনায় অভিযুক্ত ওই শিক্ষকককে সাময়িকভাবে বহিষ্কার এবং তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী ২০ আগস্টের মধ্যে কমিটিতে প্রতিবেদন দাখিল করার কথা বলা হয়েছে। এর আগেও ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে এ ধরনের অনৈতিক কাজের অভিযোগ রয়েছে।

ওই শিক্ষার্থীর বাবার অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, তার সপ্তম শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়ে ওই একই বিদ্যালয়ের শিক্ষক মিরাজ হোসেনের কাছে প্রাইভেট পড়তে যায়। গত ৬ আগস্ট অন্যান্য দিনের মতো সকালে প্রাইভেট পড়া শেষে স্কুলে ক্লাসে যাবার আগে ওই শিক্ষার্থীকে শ্লীলতাহানী চেষ্টা করেন শিক্ষক মিরাজ। এ সময় ওই শিক্ষার্থী যৌন নির্যাতনের শিকার হয়।

পরবর্তীতে বিষয়টি জানাজানি হলে বিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষার্থীর অভিভাবকগণ স্কুলে গিয়ে প্রধান শিক্ষককে বিষয়টি অবগত করেন। তারা আশ্বাস দিলেও এখন পর্যন্ত এ বিষয়টি নিয়ে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।

এতে শিক্ষার্থীরা ক্ষিপ্ত হয়ে রবিবার অভিযুক্ত শিক্ষকের স্থায়ী বহিষ্কারের দাবিতে বিক্ষোভ করেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা উক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের স্লোগান এবং প্লাকার্ড প্রদর্শন করে। 

এরপর দুপুর ১টার দিকে তারা গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর অভিযোগ দায়ের করেন। এ সময় ভুক্তভোগী ছাত্রীর বাবার স্বাক্ষরিত একটি অভিযোগপত্র তুলে দেওয়া হয় কর্মকর্তার কাছে।

এ ঘটনায় অভিযুক্ত ওই শিক্ষককে সাময়িকভাবে বহিষ্কার এবং তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী ২০ আগস্টের মধ্যে কমিটি তাদের তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করার কথা বলা হয়েছে।

ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, সাধারণ শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন করে বিক্ষোভ করছে। স্কুলের অধিকাংশ শিক্ষক অনুপস্থিত। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত প্রধান শিক্ষক কমলেশ বিশ্বাসকে পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে ওই ছাত্রীর বাবা বলেন, “আমার মেয়ের উপর অত্যাচারের ঘটনা শুনে আমি প্রাথমিকভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য অনুরোধ করি। কিন্তু পরবর্তীতে অন্যান্য আরো অভিভাবকগণসহ এসে জানতে পারি উক্ত শিক্ষক মিরাজ হোসেন এর আগেও বহুবার অনেক ছাত্রীকে যৌন হয়রানি করেছে। এ নিয়ে বেশ কয়েকবার তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। সর্বশেষ ছাত্রীকে যৌন হয়রানের দায়ে তাকে জেল কারাগারে পাঠানো হয়। জেলখানা থেকে বের হয়ে সে আবার একই কাজ শুরু করেছে। আমরা এখন তার পদত্যাগ চাই সে যেন আর কোন স্কুলে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ না পেতে পারে।”

নাম প্রকাশের না শর্তে অনেক অভিভাবকগণ জানান, পূর্বে উক্ত শিক্ষক একই বিষয়কে কেন্দ্র করে সাময়িক বরখাস্ত ও কয়েকবার জেল খেটেও তার এখনো শিক্ষা হয়নি। এর ফলে অনেক অভিভাবক অত্র প্রতিষ্ঠানে তাদের সন্তানদের পাঠাতে অনাগ্রহ প্রকাশ করছে। সকলের দাবি করপাড়া ইউনিয়ন বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক মিরাজ হোসেনরক বহিষ্কারপূর্বক চাকরিচ্যুত করে আইনের আওতায় এনে যথাযথ শাস্তি প্রদান করা হোক।

এ বিষয়ে জানতে সহকারী শিক্ষক মিরাজ হোসেনের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে ফোনটি কেটে দিয়ে বন্ধ করে দেন।

সহকারি প্রধান শিক্ষক পরিমল পান্ডে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, “ইতোপূর্বেও তিনি এ ধরনের জঘন্য কাজ করেছে। আমরা আমাদের সন্তান তুল্য শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার জন্য যা যা করণীয় তা করব। ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আমরাও সুপারিশ করেছি।

ট্যাগঃ

গোপালগঞ্জে শিক্ষকের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীকে শ্লীলতাহানীর অভিযোগ

সময়ঃ ১২:১৫:০৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১১ অগাস্ট ২০২৫

গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার করপাড়া ইউনিয়ন বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী শিক্ষক মিরাজ হোসেনের বিরুদ্ধে সপ্তম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর শ্লীলতাহানীর অভিযোগ উঠেছে।

রবিবার (১০ আগস্ট) এ ঘটনার প্রতিবাদে ক্লাস বর্জন করে অভিযুক্ত শিক্ষকের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে শিক্ষার্থীরা। 

এদিকে, এ ঘটনায় অভিযুক্ত ওই শিক্ষকককে সাময়িকভাবে বহিষ্কার এবং তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী ২০ আগস্টের মধ্যে কমিটিতে প্রতিবেদন দাখিল করার কথা বলা হয়েছে। এর আগেও ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে এ ধরনের অনৈতিক কাজের অভিযোগ রয়েছে।

ওই শিক্ষার্থীর বাবার অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, তার সপ্তম শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়ে ওই একই বিদ্যালয়ের শিক্ষক মিরাজ হোসেনের কাছে প্রাইভেট পড়তে যায়। গত ৬ আগস্ট অন্যান্য দিনের মতো সকালে প্রাইভেট পড়া শেষে স্কুলে ক্লাসে যাবার আগে ওই শিক্ষার্থীকে শ্লীলতাহানী চেষ্টা করেন শিক্ষক মিরাজ। এ সময় ওই শিক্ষার্থী যৌন নির্যাতনের শিকার হয়।

পরবর্তীতে বিষয়টি জানাজানি হলে বিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষার্থীর অভিভাবকগণ স্কুলে গিয়ে প্রধান শিক্ষককে বিষয়টি অবগত করেন। তারা আশ্বাস দিলেও এখন পর্যন্ত এ বিষয়টি নিয়ে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।

এতে শিক্ষার্থীরা ক্ষিপ্ত হয়ে রবিবার অভিযুক্ত শিক্ষকের স্থায়ী বহিষ্কারের দাবিতে বিক্ষোভ করেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা উক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের স্লোগান এবং প্লাকার্ড প্রদর্শন করে। 

এরপর দুপুর ১টার দিকে তারা গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর অভিযোগ দায়ের করেন। এ সময় ভুক্তভোগী ছাত্রীর বাবার স্বাক্ষরিত একটি অভিযোগপত্র তুলে দেওয়া হয় কর্মকর্তার কাছে।

এ ঘটনায় অভিযুক্ত ওই শিক্ষককে সাময়িকভাবে বহিষ্কার এবং তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী ২০ আগস্টের মধ্যে কমিটি তাদের তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করার কথা বলা হয়েছে।

ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, সাধারণ শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন করে বিক্ষোভ করছে। স্কুলের অধিকাংশ শিক্ষক অনুপস্থিত। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত প্রধান শিক্ষক কমলেশ বিশ্বাসকে পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে ওই ছাত্রীর বাবা বলেন, “আমার মেয়ের উপর অত্যাচারের ঘটনা শুনে আমি প্রাথমিকভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য অনুরোধ করি। কিন্তু পরবর্তীতে অন্যান্য আরো অভিভাবকগণসহ এসে জানতে পারি উক্ত শিক্ষক মিরাজ হোসেন এর আগেও বহুবার অনেক ছাত্রীকে যৌন হয়রানি করেছে। এ নিয়ে বেশ কয়েকবার তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। সর্বশেষ ছাত্রীকে যৌন হয়রানের দায়ে তাকে জেল কারাগারে পাঠানো হয়। জেলখানা থেকে বের হয়ে সে আবার একই কাজ শুরু করেছে। আমরা এখন তার পদত্যাগ চাই সে যেন আর কোন স্কুলে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ না পেতে পারে।”

নাম প্রকাশের না শর্তে অনেক অভিভাবকগণ জানান, পূর্বে উক্ত শিক্ষক একই বিষয়কে কেন্দ্র করে সাময়িক বরখাস্ত ও কয়েকবার জেল খেটেও তার এখনো শিক্ষা হয়নি। এর ফলে অনেক অভিভাবক অত্র প্রতিষ্ঠানে তাদের সন্তানদের পাঠাতে অনাগ্রহ প্রকাশ করছে। সকলের দাবি করপাড়া ইউনিয়ন বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক মিরাজ হোসেনরক বহিষ্কারপূর্বক চাকরিচ্যুত করে আইনের আওতায় এনে যথাযথ শাস্তি প্রদান করা হোক।

এ বিষয়ে জানতে সহকারী শিক্ষক মিরাজ হোসেনের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে ফোনটি কেটে দিয়ে বন্ধ করে দেন।

সহকারি প্রধান শিক্ষক পরিমল পান্ডে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, “ইতোপূর্বেও তিনি এ ধরনের জঘন্য কাজ করেছে। আমরা আমাদের সন্তান তুল্য শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার জন্য যা যা করণীয় তা করব। ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আমরাও সুপারিশ করেছি।