ঢাকা: ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনূস আহমদ বলেছেন, পিআর (প্রোপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন) নিয়ে দেশের সাধারণ জনগণের মধ্যে এক ঐক্যমত্যের আবহ তৈরি হয়েছে। স্বৈরতন্ত্রকে চিরতরে উৎখাত করতে হলে জুলাই অভ্যুত্থানের যে আকাঙ্ক্ষা তা বাস্তবায়নে উভয় কক্ষে পিআর পদ্ধতির নির্বাচনই একমাত্র পথ।
শুক্রবার (১ আগস্ট) দলটির কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত ‘জুলাই সনদের খসড়া’ বিষয়ক এক পর্যালোচনা বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ২০০৮ সাল থেকে পিআর নিয়ে কাজ করে আসছে। সম্প্রতি পিআর ইস্যুতে জনমত তৈরি, রাজনৈতিক ঐক্য গঠন, এবং ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে একাধিক দফায় আলোচনায় সক্রিয় অংশগ্রহণ করেছে। লিখিতভাবে পিআর নিয়ে আলোচনা চেয়েছে, আর আমাদের প্রতিনিধিরা ঐকমত্য কমিশনের সভায় বারবার বিষয়টি তুলেছেন।
কিন্তু ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় দফা আলোচনার এজেন্ডায় নিম্নকক্ষে নির্বাচন পদ্ধতির বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। বৃহস্পতিবার দলের প্রেসিডিয়াম সদস্যরা বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানালেও তা প্রত্যাখ্যান করা হয়।
তিনি বলেন, নিম্নকক্ষে পিআর ইস্যুকে এজেন্ডায় না রাখা এবং আলোচনা তুলতে বাধা দেওয়ার ঘটনায় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ নিন্দা প্রকাশ করছে।
দলের মুখপাত্র ও যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেন, দেশের প্রতিটি মানুষের ভোটের মূল্যায়ন নিশ্চিত করতে, ভোটসংক্রান্ত অরাজকতা, সহিংসতা ও সন্ত্রাস বন্ধ করতে পিআর পদ্ধতির কোনো বিকল্প নেই। সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও ন্যায়বিচারের প্রশ্নে পিআরই সর্বোত্তম পথ।
দলের এই নেতা আরও বলেন, নিম্নকক্ষে পিআর না থাকলে স্বৈরতন্ত্রের দীর্ঘস্থায়ী ছায়া এই দেশে থেকে যাবে। একটি রাজনৈতিক দলের বিরোধিতার কারণে দেশের অধিকাংশ রাজনৈতিক দল ও বুদ্ধিজীবীদের মতামতকে যেভাবে উপেক্ষা করা হচ্ছে, তা কার্যত জুলাইয়ের রক্ত ও চেতনাকে অস্বীকার করার নামান্তর। আমরা এমন আচরণ প্রত্যাশা করিনি।
আমরা ইতিবাচক রাজনীতিতে বিশ্বাসী। সম্ভাবনাকে স্বাগত জানাই, গ্রহণ করি। সেই কারণেই উচ্চকক্ষে পিআর বাস্তবায়নের সিদ্ধান্তকে আমাদের আমিরের পক্ষ থেকে স্বাগত জানানো হয়েছে এবং ঐকমত্য কমিশনকে ধন্যবাদ জানানো হয়েছে। তবে আমরা কমিশনের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি-নিম্নকক্ষে পিআর পদ্ধতি অন্তর্ভুক্ত করে আলোচনা করুন। ঐকমত্য না হলেও আলোচনার রেকর্ড থাকুক। ইতিহাস জানবে, কারা দেশের কল্যাণে বাধা দিয়েছে এবং কারা স্বৈরতন্ত্রকে টিকিয়ে রাখতে চেয়েছে।
যদি কমিশন এই ইস্যু আলোচনার এজেন্ডায় না আনে, তাহলে তার দায়ভার তাদেরই বহন করতে হবে বলেও মন্তব্য করেন আতাউর রহমান।
টিএ/এসআইএস