০৯:০৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৭ নভেম্বর ২০২৫, ২৩ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জাবিতে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন ও পানির ন্যায্য হিস্যার দাবি

  • Voice24 Admin
  • সময়ঃ ১২:০৩:১৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৫
  • ৫৫০ Time View

দেশের অন্যতম প্রধান তিস্তা নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা ও তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) মানববন্ধন করা হয়েছে।

শনিবার (১৮ অক্টোবর) বিকাল ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে এই মানবন্ধন করেন শিক্ষার্থীরা।

মানববন্ধনে আ ফ ম কামাল উদ্দিন হলের সহ-সভাপতি (ভিপি) জিএমএম রায়হান কবীরের সঞ্চালনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উত্তরবঙ্গের ৮ জেলার শিক্ষার্থীরা বক্তব্য রাখেন।

এ সময় উপস্থিত বক্তারা উত্তরবঙ্গের কৃষি ও প্রকৃতি সংরক্ষণ এবং কোটি মানুষের জীবিকার উন্নয়নের লক্ষ্যে চীনের সহায়তায় আগামী নভেম্বরের মধ্যে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন শুরুর তাগিদ দেন এবং ভারতের কাছ থেকে তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যার দাবি জানান।

জাকসুর যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) ফেরদৌস আল হাসান বলেন, “তিস্তা শুধু উত্তরবঙ্গের বিষয় নয়, এটি দেশের জাতীয় অর্থনীতির প্রাণ। ভারত বর্ষায় কোনো সতর্কতা ছাড়াই পানি ছেড়ে লাখ লাখ ঘর-বাড়ি ডুবিয়ে দেয়, লাখ লাখ হেক্টর জমির ফসল নষ্ট করে দেয়। আবার শুষ্ক মৌসুমে পানি বন্ধ করে সেচ ব্যবস্থা অকার্যকর করে ফেলে‌, ফলে কোনো ফসল আবাদ হয় না।”

তিনি বলেন, “বিগত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার অবৈধভাবে টিকে থাকতে তিস্তার ন্যায্য হিস্সা ও তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেনি। আমরা অন্তর্বর্তী সরকারকে নভেম্বরের মধ্যে চীনা অর্থায়নে এটি বাস্তবায়নের জোর দাবি জানাই।”

জাকসুর সহ-সভাপতি (ভিপি) আব্দুর রশিদ জিতু বলেন, “তিস্তা ভারত-বাংলাদেশের অভিন্ন নদী হওয়া সত্ত্বেও এটি পশ্চিমবঙ্গের জন্য আশীর্বাদ এবং বাংলাদেশের জন্য অভিশাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বর্ষায় আমাদের ডুবিয়ে মারে, শুষ্ক মৌসুমে পানি বন্ধ করে ফসল চাষাবাদে মারাত্মক বিঘ্ন ঘটায়। গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সরকারের কাছে আমরা আশা করেছিলাম, তারা তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করবেন। কিন্তু এই সরকার কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেয়নি। সরকারকে জোরালোভাবে বলতে চাই, ভারতীয় যেকোনো চাপকে উপেক্ষা করে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করুন; আমরা দেশবাসী আপনাদের সঙ্গে থাকব।”

জাবি উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সোহেল আহমেদ বলেন, “স্বাধীনতার পর থেকেই আমাদের মিত্র রাষ্ট্র (ভারত) মৈত্রীর পরিচয় দেননি। মহান মুক্তিযুদ্ধের ৯ নম্বর সেক্টর কমান্ডার মেজর জলিলকে গুম করার মাধ্যমে ভারতের লক্ষ্য উদ্দেশ্য বুঝা গেছে। আমাদের মেরুদণ্ড সোজা করে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে হবে। তিস্তায় ভারতের বাঁধের কারণে উত্তরবঙ্গের আট জেলা সরাসরি আক্রান্ত। প্রতিবেশী মৈত্রী দেশ হিসেবে তিস্তার ন্যায্য হিস্যা দিতে হবে।”

নভেম্বরের মধ্যে চীনা সহায়তায় তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের কাজ শুরু করতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অন্তর্বর্তী সরকারকে আহ্বান জানান তিনি।

মানববন্ধনে আরো বক্তব্য রাখেন জীববিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক মোহাম্মদ মাফরুহী সাত্তার, জাবি শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক জমির উদ্দিন মোহাম্মদ বাবর, জাবি শাখা ছাত্রশিবিরের সদস্য শফিউজ্জামান শাহীন, ও বাগছাসের যুগ্ম-আহ্বায়ক জিয়াউদ্দিন আয়ান প্রমুখ।

ট্যাগঃ

জাবিতে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন ও পানির ন্যায্য হিস্যার দাবি

সময়ঃ ১২:০৩:১৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৫

দেশের অন্যতম প্রধান তিস্তা নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা ও তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) মানববন্ধন করা হয়েছে।

শনিবার (১৮ অক্টোবর) বিকাল ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে এই মানবন্ধন করেন শিক্ষার্থীরা।

মানববন্ধনে আ ফ ম কামাল উদ্দিন হলের সহ-সভাপতি (ভিপি) জিএমএম রায়হান কবীরের সঞ্চালনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উত্তরবঙ্গের ৮ জেলার শিক্ষার্থীরা বক্তব্য রাখেন।

এ সময় উপস্থিত বক্তারা উত্তরবঙ্গের কৃষি ও প্রকৃতি সংরক্ষণ এবং কোটি মানুষের জীবিকার উন্নয়নের লক্ষ্যে চীনের সহায়তায় আগামী নভেম্বরের মধ্যে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন শুরুর তাগিদ দেন এবং ভারতের কাছ থেকে তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যার দাবি জানান।

জাকসুর যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) ফেরদৌস আল হাসান বলেন, “তিস্তা শুধু উত্তরবঙ্গের বিষয় নয়, এটি দেশের জাতীয় অর্থনীতির প্রাণ। ভারত বর্ষায় কোনো সতর্কতা ছাড়াই পানি ছেড়ে লাখ লাখ ঘর-বাড়ি ডুবিয়ে দেয়, লাখ লাখ হেক্টর জমির ফসল নষ্ট করে দেয়। আবার শুষ্ক মৌসুমে পানি বন্ধ করে সেচ ব্যবস্থা অকার্যকর করে ফেলে‌, ফলে কোনো ফসল আবাদ হয় না।”

তিনি বলেন, “বিগত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার অবৈধভাবে টিকে থাকতে তিস্তার ন্যায্য হিস্সা ও তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেনি। আমরা অন্তর্বর্তী সরকারকে নভেম্বরের মধ্যে চীনা অর্থায়নে এটি বাস্তবায়নের জোর দাবি জানাই।”

জাকসুর সহ-সভাপতি (ভিপি) আব্দুর রশিদ জিতু বলেন, “তিস্তা ভারত-বাংলাদেশের অভিন্ন নদী হওয়া সত্ত্বেও এটি পশ্চিমবঙ্গের জন্য আশীর্বাদ এবং বাংলাদেশের জন্য অভিশাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বর্ষায় আমাদের ডুবিয়ে মারে, শুষ্ক মৌসুমে পানি বন্ধ করে ফসল চাষাবাদে মারাত্মক বিঘ্ন ঘটায়। গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সরকারের কাছে আমরা আশা করেছিলাম, তারা তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করবেন। কিন্তু এই সরকার কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেয়নি। সরকারকে জোরালোভাবে বলতে চাই, ভারতীয় যেকোনো চাপকে উপেক্ষা করে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করুন; আমরা দেশবাসী আপনাদের সঙ্গে থাকব।”

জাবি উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সোহেল আহমেদ বলেন, “স্বাধীনতার পর থেকেই আমাদের মিত্র রাষ্ট্র (ভারত) মৈত্রীর পরিচয় দেননি। মহান মুক্তিযুদ্ধের ৯ নম্বর সেক্টর কমান্ডার মেজর জলিলকে গুম করার মাধ্যমে ভারতের লক্ষ্য উদ্দেশ্য বুঝা গেছে। আমাদের মেরুদণ্ড সোজা করে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে হবে। তিস্তায় ভারতের বাঁধের কারণে উত্তরবঙ্গের আট জেলা সরাসরি আক্রান্ত। প্রতিবেশী মৈত্রী দেশ হিসেবে তিস্তার ন্যায্য হিস্যা দিতে হবে।”

নভেম্বরের মধ্যে চীনা সহায়তায় তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের কাজ শুরু করতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অন্তর্বর্তী সরকারকে আহ্বান জানান তিনি।

মানববন্ধনে আরো বক্তব্য রাখেন জীববিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক মোহাম্মদ মাফরুহী সাত্তার, জাবি শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক জমির উদ্দিন মোহাম্মদ বাবর, জাবি শাখা ছাত্রশিবিরের সদস্য শফিউজ্জামান শাহীন, ও বাগছাসের যুগ্ম-আহ্বায়ক জিয়াউদ্দিন আয়ান প্রমুখ।