ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এ এস এম সালেহ আহমেদ বলেছেন, “প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের জন্য তথ্য অধিকার আইন জানা থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এর মাধ্যমে তারা নিজেদের দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে সচেতন হতে পারবে, সেই সাথে জনগণের প্রতি তাদের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত হবে।”
বুধবার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ভূমি মন্ত্রণালয়ে কর্মরত কর্মকর্তা কর্মচারীদের ২০২৫-২৫ অর্থবছরে অনুমোদিত পরিকল্পনা অনুসারে ‘তথ্য অধিকার আইন এবং The Official Secrets Act, 1923’ বিষয়ক’ প্রশিক্ষণে তিনি এসব কথা বলেন।
সিনিয়র সচিব বলেন, “এই আইনের মাধ্যমে সরকারি কর্মচারীরা দুর্নীতি ও অনিয়ম রোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে নিজ দায়িত্ব পালনে সহায়ক হবে। অন্যদিকে তথ্য অধিকার আইন এবং অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট, ১৯২৩ দুটি ভিন্ন আইন যা সরকারি গোপনীয়তা এবং তথ্য প্রকাশের সাথে সম্পর্কিত। তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯ নাগরিকদের তথ্য প্রাপ্তির অধিকার নিশ্চিত করে, যেখানে অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট, ১৯২৩, কিছু নির্দিষ্ট সরকারি তথ্য প্রকাশে বিধি-নিষেধ আরোপ করে, যা মূলত জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে।”
“অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট, ১৯২৩ সরকারি সংস্থাগুলোর কার্যক্রমের স্বচ্ছতা এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সাহায্য করে। রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা রক্ষা এবং গুপ্তচরবৃত্তি সম্পর্কিত অপরাধগুলির জন্য শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে। আইন মুখস্ত করার কোনো বিষয় নয় চর্চায় বিষয়।”
আর চর্চার জন্য প্রশিক্ষণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
সিনিয়র সচিব বলেন, “তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯ এর মাধ্যমে জনগণ সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছে থাকা তথ্য জানার অধিকার লাভ করে। এটি তথ্যের অবাধ প্রবাহ এবং জনগণের তথ্য অধিকার নিশ্চিত করার জন্য প্রণীত হয়েছে। এই আইন অনুযায়ী বাংলাদেশের নাগরিকরা সরকারের কাছ থেকে তথ্য জানতে চাইতে পারে,তবে কিছু বিশেষ পরিস্থিতিতে কিছু তথ্য প্রকাশ করা বাধ্যতামূলক নয়। এই আইনের মূল উদ্দেশ্য হলো-জনগণের ক্ষমতায়ন, সরকারের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা, দুর্নীতি হ্রাস করা, গণতন্ত্রের উন্নতি করা।”
তথ্য অধিকার অধ্যাদেশ ২০ অক্টোবর ২০০৮ জারি করা হয়। এই অধ্যাদেশই ২৯ মার্চ ২০০৯ সালে সংসদে পাস করে একই বছর ১ জুলাই ২০০৯ সালে এটি কার্যকর হয়। আঠারশ নিরানব্বই সাল থেকে ১৯০৫ সাল পর্যন্ত লর্ড কার্জন যখন ভারতবর্ষের ভাইসরয় ছিলেন তখন এই আইন প্রণয়ন করা হয়। বেশ কয়েক-দফা সংশোধিত হয়ে ১৯২৩ সালে অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট জারি করা হয় এবং ওই বছরের এপ্রিল মাসের ২ তারিখ থেকে কার্যকর করে। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ১৪৯ নম্বর অনুচ্ছেদ ও বাংলাদেশ লজ (রিভিশন অ্যান্ড ডিকলারেশন) অ্যাক্ট, ১৯৭৩ অনুসারে ‘The Official Secrets Act, 1923’ প্রচলিত আইন হিসেবে বাংলাদেশ সরকার গ্রহণ করেছে।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন অনুবিভাগ) মো. শরিফুল ইসলাম।দশম গ্রেডের কর্মকর্তাদের এই প্রশিক্ষণে মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।