ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির চরমোনাই পীর সৈয়দ রেজাউল করিম বলেছেন, ‘‘খুনি, জালিম ও দুর্নীতিমুক্ত দেশ গড়তে হলে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন দিতে হবে। কারণ প্রচলিত নির্বাচন পদ্ধতি কালো টাকার দৌরাত্ম্য, পেশিশক্তি এবং ভোট জালিয়াতির সুযোগ করে দেয়। তাই, বাংলার মানুষ আর এই পদ্ধতি দেখতে চায় না।’’
শুক্রবার (২২ আগস্ট) রাজধানীর শাহবাগে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের ৩৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত ছাত্র সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
পিআর পদ্ধতির পক্ষে যুক্তি দিয়ে চরমোনাই পীর বলেন, ‘‘পিআর পদ্ধতি চালু হলে একটি সুষম সংসদ তৈরি হবে। বিশ্বের ৯১টি দেশে এই পদ্ধতি চালু আছে এবং কোনো দেশ এটিকে বাতিল করেনি। বরং নতুন নতুন দেশ এই পদ্ধতির দিকে ঝুঁকছে।’’
দেশের সিংহভাগ রাজনৈতিক দল পিআর পদ্ধতির নির্বাচন চায় দাবি করে রেজাউল করীম বলেন, ‘‘কিছু স্বার্থান্বেষী মহল এর বিরোধিতা করছে। তাই সরকারের প্রতি গণভোটের আহ্বান জানাচ্ছি। জনগণের কাছে মত জানতে চাওয়া হোক, তারা কোন পদ্ধতিতে নির্বাচন চায়।’’
এ সময় সুজন (সুশাসনের জন্য নাগরিক) পরিচালিত এক জরিপের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘‘দেখা গেছে, দেশের ৭১ শতাংশ মানুষ পিআর পদ্ধতির পক্ষে মত দিয়েছেন।’’
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি কয়েকটি দাবি জানিয়ে দলটির আমির বলেন, ‘‘নির্বাচন ব্যবস্থার মৌলিক পরিবর্তন আনতে হবে। যারা হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে তাদের দৃশ্যমান বিচার করতে হবে। সব শেষে একটি সুষ্ঠু জাতীয় নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে।’’
ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের দায়িত্বশীলদের আদর্শবান হওয়ার আহ্বান জানিয়ে চরমোনাই পীর বলেন, ‘‘তোমরা অন্যান্য রাজনৈতিক দলের ছাত্র সংগঠনগুলোর আচরণ থেকে শিক্ষা নাও। যারা সন্ত্রাসী, খুনি ও চাঁদাবাজির মতো অপকর্মে জড়িত। তাদের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে তোমরা এমন একটি আদর্শ প্রতিষ্ঠা করো, যেটা ইসলাম চায়।’’
তিনি বলেন, ‘‘ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের ছেলেরা ৩৪ বছরে কোনো বদনাম অর্জন করেনি, যা আল্লাহর বিশেষ রহমত।’’
রেজাউল করিম আশা প্রকাশ করে বলেন, ‘‘ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের মাধ্যমেই সাধারণ মানুষ মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারবে এবং দেশ থেকে খুনিদের উৎখাত করা সম্ভব হবে।’’
ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সভাপতি ইউসুফ আহমদ মানসুরের মভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি জেনারেল শেখ মাহবুবুর রহমান নাহিয়ানের সঞ্চালনায় সমাবেশে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম, মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ বক্তব্য রাখেন।