জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকার আত্মহত্যায় প্ররোচনার মামলায় অভিযোগপত্র দাখিল করেছে পুলিশ।
এতে তার সহপাঠী রায়হান সিদ্দিকী আম্মানকে অভিযুক্ত করা হলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলামকে অব্যাহতির সুপারিশ করা হয়েছে।
রবিবার (১০ আগস্ট) প্রায় দেড় বছর পর কুমিল্লার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মিজানুর রহমান বলেন, “তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় সহপাঠী রায়হান সিদ্দিকী আম্মানের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে। তবে প্রমাণের অভাবে সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলামকে অব্যাহতির সুপারিশ করা হয়েছে।”
তিনি বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তাসহ ২৩ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। এছাড়া অবন্তিকার মুঠোফোন থেকে প্রাপ্ত ছবি, স্ক্রিনশট, মেসেঞ্জার ও হোয়াটসঅ্যাপের বার্তা এবং তার ফেসবুকে দেওয়া ‘সুইসাইড নোট’ বিশ্লেষণ করা হয়। ফরেনসিক পরীক্ষায় আম্মানের পাঠানো মানসিক হয়রানিমূলক বার্তার প্রমাণ মেলে, যা অবন্তিকাকে আত্মহত্যায় প্ররোচিত করেছে।”
দ্বীন ইসলামকে অব্যাহতি দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অবন্তিকার মা তাহমিনা বেগম। তিনি বলেন, “অবন্তিকা মৃত্যুর আগে ফেসবুক পোস্টে দ্বীন ইসলামকে অভিযুক্ত করেছে। এর চেয়ে বড় সাক্ষ্য আর কী হতে পারে? তাহলে দ্বীন ইসলাম কীভাবে বাদ পড়ল?”
তিনি আরো বলেন, “মেয়ের মৃত্যুর নেপথ্যে জড়িতরা শাস্তি পাবে কি না, শুরু থেকেই সন্দেহ ছিল। যে জবি প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানিয়েও মেয়েকে বাঁচাতে পারিনি, সেই প্রশাসন কীভাবে দায় এড়াতে পারে? পুলিশ সঠিকভাবে তদন্ত করলে দ্বীন ইসলাম কোনোভাবেই রেহাই পেত না।”
গত ২০২৪ সালের ১৫ মার্চ রাতে কুমিল্লা নগরের বাগিচাগাঁও এলাকার ভাড়া বাসায় গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন অবন্তিকা (২৪)। মৃত্যুর আগে ফেসবুক পোস্টে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম ও সহপাঠী রায়হান আম্মান সিদ্দিকীসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে হয়রানি ও উৎপীড়নের অভিযোগ করেন। পরদিন তার মা তাহমিনা বেগম আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে দুইজনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন।
ঘটনার পর দুই আসামিকেই গ্রেপ্তার করা হলেও পরে তারা জামিনে মুক্ত হন। দীর্ঘ তদন্ত শেষে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ।